দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময়ের ধারাবাহিকতায় ছেদ। বাঁকুড়ার সুমিষ্ট আম্রপালির ফলনে ৭৫ শতাংশ ঘাটতি। বিদেশে রফতানি তো দূরঅস্ত, এবার দেশের মানুষের কাছেও অমিল হতে পারে আম্রপালির স্বাদ।
গত এক দশকে রাজ্য তথা দেশের আমের মানচিত্রে জ্বলজ্বল করেছে রুখাশুখা বাঁকুড়া জেলার নাম। এই সময়ের মধ্যে শুধু দেশের বাজারেই নয়, বিদেশের বাজারেও রীতিমতো সুনাম কুড়িয়েছিল বাঁকুড়ায় উৎপাদিত আম্রপালি আম। কিন্তু এবার সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ টানল প্রকৃতি। দীর্ঘস্থায়ী শীত ও অসময়ে ঘন ঘন বৃষ্টিতে এমনিতেই আমের মুকুল কম এসেছিল। কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিয়ে গিয়েছে একের পর এক কালবৈশাখী।
এক সময় আম চাষে একাধিপত্য ছিল মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলার। ২০০৬ সালে বাঁকুড়া জেলায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয় আম চাষ। মূলত আম্রপালি ও মল্লিকা--এই দুই প্রজাতির আমবাগান তৈরি হলেও মান ভালো হওয়ায় আম্রপালি আম দ্রুত জনপ্রিয়তা পায়। দেশের সীমা ছাড়িয়ে বাঁকুড়ার আম্রপালির স্বাদে মজে কাতার, কুয়েত ও দুবাইয়ের আমজনতা। উদ্যান পালন দফতরের হিসাবে, বাঁকুড়া জেলাজুড়ে বর্তমানে সাড়ে সাত হাজার হেক্টর আমবাগানে প্রতি বছর প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। বাঁকুড়ার চাহিদা মিটিয়ে যা রফতানি হয় দেশের বিভিন্ন রাজ্য, এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতেও। কিন্তু এবার সেখানেই বাধ সেধেছে প্রকৃতি। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় এবার বাঁকুড়ার অধিকাংশ আমবাগানের গাছই আমবিহীন। বিরুপ প্রাকৃতিক অবস্থা কাটিয়ে যে গুটিকয়েক গাছে মুকুল এসেছিল, তাও ঝরে গিয়েছে একের পর এক কালবৈশাখীর জেরে।
এদিকে সারা বছর আমগাছের পরিচর্যা করে মরসুমে ফসল না পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বড়সড় লোকসানের মুখে পড়েছেন জেলার কয়েক হাজার আমচাষি।
এবার শুনে নেওয়া যাক, ক্ষতির মুখে পড়া চাষিরা কী বলছেন।
উৎপাদন কম হওয়ায় বিদেশের বাজারে আম রফতানির একের পর এক বরাত বাতিল করেছে জেলার উদ্যান পালন দফতর। এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই জেলার বাজারগুলিতে আমের জোগান কতটা দেওয়া যাবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় জেলার উদ্যান পালন দফতর।