Share this link via
Or copy link
সুজিত সাহা : মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বীরভূম ভ্রমণকালে বোলপুরে একটা শান্ত স্নিগ্ধ সবুজে ঘেরা অঞ্চল (বর্তমানে শান্তিনিকেতন) তাঁর খুব মনে ধরে। ১৮৬৩ সালে এই জায়গাটা কেনবার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি, রায়পুরের জমিদার ভূবন মোহন সিনহার কাছে। বিশ বিঘা জমি ষোলো আনার বিনিময়ে পাট্টা নেন তিনি। মহর্ষির মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্জনে ঈশ্বর চিন্তা ও ধর্মালোচনার বিকাশ। ঠিক তার পঁচিশ বছর পর তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শান্তিনিকেতন ট্রাষ্টের। তার মাধ্যমেই একটি অতিথি ভবন, প্রার্থনা কক্ষ, এবং ধর্মীয় সাহিত্যের জন্য একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহ থেকে ফিরে আসেন শান্তিনিকেতনে। সময়টা ছিল ১৯০১ সাল। পাঁচজন খুদে ছাত্রকে নিয়ে শুরু করেন ব্রক্ষ্ম বিদ্যালয়।
বাঁধাধরা গণ্ডির মাঝে আবদ্ধ থেকে পড়াশোনার ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি। প্রকৃতির মাঝে উন্মুক্ত শিক্ষাচিন্তা, শিশু মনকে সকল দিকে সমৃদ্ধ করার কথা ভেবেছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর চিন্তা চেতনায় ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথই বিশ্বভারতীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ১৯১৮ সালে। এর তিনবছর পর অর্থাৎ ১৯২১ সালে ২৩ শে ডিসেম্বর আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিতে বিশ্বভারতীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরবর্তীকালে শিক্ষা ও শিল্পকলা ক্ষেত্রে দেশের মূল পীঠস্থান হয়ে ওঠে এই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। উদ্বোধনের ত্রিশ বছর পড়ে ১৯৫১ সালে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে।
নানা চড়াই উৎরাই ও প্রতিকূলতার মাঝেও নিজের গরিমায় আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কত স্বনামধন্য ব্যক্তিদের পাদস্পর্শে ধন্য হয়েছে এই পবিত্রভূমি।
বিশ্বের শিল্পী ও শিল্পানুরাগীদের কাছে মহা তীর্থক্ষেত্র হিসাবে স্থান পেয়েছে এই শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।