২৮ মার্চ, ২০২৪

Aindrila: বিশ্বকাপ উদ্বোধনীর দিনে ঐন্দ্রিলার মৃত্যু! ফাইটার 'মিষ্টির' শোকে বিমর্ষ ফুটবলপ্রিয় হাওড়াও
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-11-21 12:35:42   Share:   

প্রসূন গুপ্ত: হাওড়া ময়দানে আসার আগেই নজরে পড়লো বড় একটা ব্রাজিলের পতাকা। ইতিউতি রয়েছে আর্জেন্টিনাও, কিন্তু রবিবারের সন্ধ্যায় যেন নিষ্প্রভ হয়ে রইলো গঙ্গার পশ্চিমপাড় বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা টিকিয়াপাড়া। রবিবারই ছিল কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধন। নজরকাড়া খেলার আগে মাঠের অনুষ্ঠান আর তারপর কাতার বনাম ইকুয়েডরের খেলা। কথা তো জানাই যে ফুটবল পাগল বাংলা মাতোয়ারা হবে এক রবিবার থেকে ফাইনালের রবিবার অবধি। সমস্ত উৎসাহে যেন জল ঢেলে দিলো অভিনেত্র্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার মৃত্যু।

তাঁর দু'বার ক্যান্সার আক্রমণ আচমকা হৃদরোগে আচ্ছন্ন হওয়া, খবরের কাগজ, টেলিভশন থেকে সোশাল মিডিয়াতে বেশ কিছুদিন ধরে ঐন্দ্রিলার অসুস্থতা নিয়েই খবর রাজ্যের মানুষকে হাওড়া বেসরকারি হাসপাতালের দিকেই টেনে নিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত অনেকে লড়াই করে তাঁর বিশেষ বন্ধু তথা অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী এবং শর্মা পরিবারকে একা করে চলেই গেলেন আদরের মিষ্টি। মিরাকেল হল না, ব্যর্থ শত প্রার্থনা।

সারা বাংলার মানুষ, বিশেষ করে যাঁরা এই খবরে নজর দিয়েছিলো তারা বিমর্ষ হয়ে গেলো ২৪ বছরের তরুণীর মৃত্যুতে। কিন্তু হাওড়ার অধিবাসীরা মনে গেঁথে রইল যে তাঁদের শহর থেকেই ২০ দিন যমে-মানুষে টানাটানির পর বিদায় নিলেন ঐন্দ্রিলা।

শহরে ঢুকেই সাধারণত মল্লিক ফটকের কাছে সর্বদা মানুষের ঢল দেখা যায়, রবিবার তাঁরাও অনুপস্থিত। হাসপাতাল থেকে ঐন্দ্রিলার নিথর দেহ বের করার সময় কয়েকশো মানুষের ভিড় দেখা গিয়েছিলো। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই বাড়িমুখী মানুষ।

পঞ্চাননতলায় সুবিশাল কার্তিকের মূর্তি নিয়ে ডিজে বাজিয়ে গঙ্গার দিকে যাচ্ছিলো কোনও এক ক্লাবের সদস্যরা। পথ মধ্যেই এলাকার প্রবীণ কিছু মানুষের অনুরোধ, ভাসান দাও কিন্তু বাজনাটা আজ বন্ধ থাকুক। সেই অনুরোধে কাজ হল, বন্ধ হলো ডিজে। কদমতলার মোড়ে আসতেই এই প্রতিবেদকের নজরে এলো একটি সাদাকালো ঐন্দ্রিলার ছবি, নিচে হাতে লেখা 'না ফেরার দেশে চলে গেলেন ঐন্দ্রিলা'। রবিবার ছিল অসংখ্য বিয়ের অনুষ্ঠান। কিন্তু সেভাবে কোথাও গাড়ির জটলা দেখা গেলো না। নয়া রাস্তার  এক পাশে একদল যুবক গভীর ভাবে কথা বলছিলো, কাছে যেতেই শুনি 'দু দুটো ক্যান্সার তার উপর এতগুলো হার্ট অ্যাটাক, নিতে পারলো না মেয়েটা।' বিধায়ক-চিকিৎসক রানা চট্টোপাধ্যায় জানালেন, চিকিৎসার ত্রুটি ছিল না। শেষ দিকে এতগুলো অ্যাটাক, তার উপর কোমাচ্ছন্ন, ফিরিয়ে আনার লড়াইটা কঠিন ছিল। ফেরার পথে মুসলিম অধুষ্যিত এলাকাতেও শোকের ছায়া। প্রশ্ন করতেই ইদ্রিস বলে এক যুবক বললো, টিভি সিরিয়াল দেখে, এমন হয়তো নামী তারকা ছিলেন না, কিন্তু এই কটা দিনে বড্ডো মায়া পরে গিয়েছিলো।

এদিকে, এবারের বিশ্বকাপ শেষ দেশের হয়ে খেলা মেসি-রোনাল্ডোর। এঁরাও বিদায় নেবে অনেক সমর্থককে কাঁদিয়ে। কিন্তু সেই কান্না কি সব্যসাচীর বেদনার থেকেও বড়? ঐন্দ্রিলার বাবা-মায়ের সন্তানহারার যন্ত্রণার থেকেও বড়। আগামীর প্রেম উপন্যাসের বাস্তব চরিত্র হয়ে থাকলেন সব্যসাচী এবং তাঁর প্রয়াত প্রেমিকা ঐন্দ্রিলা।



Follow us on :