Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুর: মৃত্যু সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের আত্মোপলব্ধি আত্মপ্রকাশ করেছে তাঁর সৃষ্টিতে বহুভাবে। তাঁর দীর্ঘ জীবনে অজস্র মৃত্যুর আঘাত তাঁর চিন্তায় চেতনায় ছড়িয়ে দিয়েছে গভীর নিমগ্ন ভাবকনাগুলো। যা তাঁকে দিয়ে বারবার উচ্চারণ করিয়েছে 'মৃত্যুকে লব অমৃত করিয়া তোমার চরণে ছোঁয়ায়ে।' রবীন্দ্র সাহিত্যে মৃত্যু কোথাও ভয়ঙ্কর রূপে প্রকাশ পায়নি। খুব সংক্ষিপ্ত কথায় মৃত্যুর ছবি আমরা পেয়েছি- এত স্বাভাবিক, গুরুত্বহীন বর্ণনা, অথচ তার অনুষঙ্গ কী গভীর এবং বেদনাময়। আবার কোথাও বা ছোট্ট একটা কথায়, একটা উপমায় বুনে দিয়েছেন গভীর আস্তরণ, যা আমাদের আবিষ্ট করে তোলে। রবি ঠাকুরের ছোটগল্পের কিছু মৃত্যু দৃশ্য তুলে ধরলে ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
'ঘাটের কথা' ছোট গল্পে কুসুমের মৃত্যুতে রবীন্দ্রনাথ কী স্নেহকোমল করে তুলেছেন তাঁর বর্ণনায়- 'এতটুকু বেলা হইতে সে এই জলের ধারে কাটাইয়াছে, শ্রান্তির সময় এই জল যদি হাত বাড়াইয়া তাহাকে কোলে করিয়া না লইবে, তবে আর কে লইবে।' 'কঙ্কাল' গল্পে একজন নাসিসিষ্ট মেয়ে কীভাবে কঙ্কালে পরিণত হলো তার বর্ণনা। প্রেমে ব্যর্থতা এবং তার জন্য বিষ খেয়ে আত্মহত্যার কাহিনীতেও মৃত্যুকে রোমান্টিক করে তোলা হয়েছে নায়িকার অন্তিম ভাবনায়- 'ইচ্ছা ছিল যখন লোকে আসিয়া আমাকে দেখিবে তখন এই হাসিটুকু যেন রঙিন নেশার মতো আমার ঠোঁটের কাছে লাগিয়া থাকে।' (চলবে)