গরিবের শপিং মল, শুনেছেন কখনও? না শুনলে আসতে হবে দুর্গাপুরে। ঝাঁ চকচকে কোনও শপিং মল নয়। এখানে মিলবে আট থেকে আশি সবার পোশাক। ফ্রি বাজার। তবে এই বাজার দুঃস্থদের জন্য। এক দম্পতির হাত ধরে যাত্রা শুরু ফ্রি বাজারের। এই দম্পতি দেখিয়ে দিলেন, জীবনের ধন কিছুই যায় না ফেলা।
মিলবে কাপড়, ছোটদের জামা, প্যান্ট সব কিছু। দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর আশিস মার্কেটের কাছে শুরু হল এই ফ্রি বাজার। আর দুর্গাপুরের এক দম্পতির উদ্যোগে পুরনো জামাকাপড়ের রকমারি সম্ভার নিয়ে শুরু এই ফ্রি বাজারে মানুষের ভিড়। এক কথায় গরিবের শপিং মলের সূচনা শহর দুর্গাপুরের বুকে।
শুভ চক্রবর্তী ও রমা চক্রবর্তী। করোনাকালে এই দম্পতি নিজেদের চোখে দেখেছিলেন মানুষের কষ্টের ছবি, দেখেছিলেন যন্ত্রণার ছবি। নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে বস্তি এলাকায় স্যানিটাইজার মেশিন নিয়ে স্প্রে করতে হাজির হয়ে গিয়েছিলেন। শুধু বস্তি এলাকাই নয়, পুলিস স্টেশন থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন স্থানে করোনা মোকাবিলায় বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এবার আরও এক নতুন উদ্যোগ শহরের এই দম্পতির। জামাকাপড়ের পাশাপাশি কিছু সংখ্যক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের জন্য রয়েছে হুইল চেয়ারও।
ঘরে যে সমস্ত জামাকাপড় পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে, সেগুলি তাঁদের দেওয়ার জন্য আবেন করেছিলেন এই দম্পতি। আবেদনে সাড়া দিয়েছে শহর দুর্গাপুরের বেশ কিছু মানুষ। শহরবাসীর দরজায় দরজায় ঘুরে পুরনো কাপড় সংগ্রহ করে দুর্গাপুরের এই দম্পতি ইস্পাতনগরীর এ জোনের আশিস মার্কেটের কাছে একটি দোকানঘর ভাড়া নেয়। আর সেই দোকানই এখন গরিবের শপিং মল। কিন্তু কীভাবে এল এই ভাবনা, জানালেন দম্পতি।
দুর্গাপুরের মহানাগরিক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় এই দোকানের উদ্বোধন করেন। দুর্গাপুরের এই দম্পতির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন মহানাগরিক।
এই ফ্রি বাজার ফিরিয়ে দিল অভাবী মানুষের মুখের হাসি। এই উদ্যোগে খুশি স্থানীয়রাও।
সবাই যদি এমনটা ভাবতে পারত, তাহলে বোধহয় আরও ভালো থাকত পৃথিবী।
দুর্গাপুরের শুভ আর রমা চক্রবর্তীর গরিবের শপিং মল এক নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখাল।