Share this link via
Or copy link
প্রসূন গুপ্ত: মূলত রাজপুতানা সংস্কৃতির স্থান বলে খ্যাত আজমের। অনেকেই এই শহরটিকে আজমির বলে ভুল উচ্চারণ করে থাকলেও রাজস্থানিরা এই শহরকে আজমের বলেই জানেন। রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে বাসে এক থেকে দেড় ঘন্টার পথ। একসময় ন্যারোগেজের রেলগাড়ি চলতো বর্তমানে রাস্তা চওড়া হয়েছে। আজমেরকে অনেকে তীর্থস্থান হিসাবে দেখলেও আসলে এটা একটি আদি শহর। এখানে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচুর অফিস আছে ফলে অনেক বাঙালির বাস এখানে। তবে এটা সত্যি যে আজমেরে ইসলাম ধর্মীয়দের যে মাজার বা মসজিদ আছে তা সত্যি দর্শনীয়।
মক্কার পরে এত বড় মসজিদ আর কোথাও নেই। আগে পাকিস্তান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা যখন ভারতে আসতেন, তারা অবশ্যই আজমের শরিফে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে এসে মাজারে চাদর ছড়িয়েছেন। তবে আজমের মসজিদে বা শরিফে রোজ যত মুসলমান যায় তার তিনগুন হিন্দু রোজ এই শরিফে যান। এখানে ধর্ম বড় বিষয় নয়, খালি যেই প্রবেশ করবে তার মাথা ঢেকে ঢুকতে হবে। ভিতরে প্রবেশ করলে অজস্র জলের কল আছে, সেখানে হাত পা ধুয়ে মূল মাজারে প্রবেশ করতে হবে। মজার বিষয় এই যে, এখানে একমাত্র প্রসাদ বিতরণ হয়ে থাকে। ছোট প্যাকেটে নকুলদানা ইত্যাদি খাবার নিয়ে প্রবেশ করা যেতে পারে।
এছাড়া খিচুড়ি বা পোলাওয়ের মিশ্রনে (এক অদ্ভুত নিরামিষ চাল ডালের মিশ্রণ) প্রসাদ পাওয়া যায়। একেবারে বড় পুজো মণ্ডপের প্রসাদের স্বাদ সঙ্গে ঘি গরম মশলাও থাকে। একটি উঁচু উনোনে (প্রায় বারো চোদ্দ ফুট) সুবিশাল কড়াইতে এই রান্না হয়ে থাকে যা রন্ধনের সময়ে আপনি সিঁড়ি দিয়ে উঠে দর্শন করতে পারেন। কেন মসজিদে প্রসাদ এই প্রশ্নের উত্তরে এক কর্মচারীর উত্তর, মূলত হিন্দু দর্শনার্থীরা আসেন। তাঁদের প্রসাদ তো দিতে হবে।
একইসঙ্গে এই শরিফের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে হিন্দুদের একমাত্র ব্রহ্মা দেবের মন্দির পুষ্কর। এখানেও প্রচণ্ড ভিড় হয় এবং এখানেও সর্বধর্মের মানুষের প্রবেশ ঘটে। মঙ্গলবার পূর্ণিমার দিনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যকে নিয়ে এই দুই ধর্মীয় স্থানে যাচ্ছেন।