মাধ্যমিকের পর উচ্চমাধ্যমিকেও জয়জয়কার দিনহাটার। উচ্চমাধ্যমিকের মেধাতালিকায় প্রথম দশে দিনহাটা সোনিদেবী জৈন হাইস্কুলের ১০ জন কৃতি ছাত্র-ছাত্রী জায়গা করে নিয়েছেন। জেলায় যা নজিরবিহীন ঘটনা। আর এই বিশাল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীর সাফল্যে খুশির হাওয়া সোনিদেবী উচ্চ বিদ্যালয় সহ গোটা শহর জুড়েই।
১৯৪৪ সালে দিনহাটা সোনিদেবী উচ্চ বিদ্যালয়ের পথ চলা শুরু। কোচবিহার জেলার মধ্যে অন্যতম সেরা স্কুল। উচ্চমাধ্যমিকে সায়েন্স বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা জেলায় বরাবরই ভালো ফল করেন। কোভিড পরিস্থিতিতে কিছুদিন স্কুল বন্ধ থাকার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় অনলাইনে ক্লাস করানোর। এরপর থেকেই স্কুলের পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, জীববিদ্যা ও অঙ্কের নিয়মিত অনলাইনে ক্লাস হত। অনলাইনে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা নেওয়া হত এবং তাঁদের খাতা মূল্যায়ন করা হত। পরবর্তীতে অফলাইনে দেড় মাসের বেশি ক্লাস চলে। সেই সময় স্কুলে সপ্তম পিরিয়ড করে ক্লাস হত বলে জানান স্কুলের এক শিক্ষক। সায়েন্সের বিষয়গুলিতে প্রতিদিনই অতিরিক্ত ক্লাস নিতেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এবছর ৩৮৫ জন ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে সায়েন্স ১৪৯ জন, কলা বিভাগে ২৭৩ জন এবং বানিজ্য বিভাগে ৭ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেন। শুক্রবার সকালে মেধাতালিকা প্রকাশ হলে দেখা যায়, এই স্কুলের ছাত্রী অদিশা দেবশর্মা ৪৯৮ নম্বর পেয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছেন। এরপর একের পর এক কৃতীদের নাম ঘোষণা হতে থাকে। অনুষ্কা ভট্টাচার্য ৪৯৪ নম্বর পেয়ে চতুর্থ, অদিতি শাহানা ও দিতসা সূত্রধর ৪৯৫ নম্বর পেয়ে পঞ্চম, আয়ুষ্কা ভৌমিক ৪৯২ নম্বর পেয়ে সপ্তম, অনন্যা দেব ও কেকা রায় ৪৯১ নম্বর পেয়ে অষ্টম, মিতালি বর্মন ৪৯০ নম্বর পেয়ে নবম এবং প্রেরণা বর্মন ও রিতম বর্মন ৪৮৯ নম্বর পেয়ে দশম স্থান অধিকার করেছেন। একই স্কুল থেকে দশজন মেধাতালিকায় স্থান পাওয়ায় খুশির হাওয়া দিনহাটায়। শুক্রবার বিকেলে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে দিনহাটা শহরে একটি শোভাযাত্রা বের হয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক পিন্টু কর্মকার বলেন, বরাবর স্কুল থেকে ভালো ফল হয়েছে। এর আগে ২০১১ সালে পল্লবী কর্মকার ও নিবেদিতা প্রামাণিক রাজ্যে মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছিলেন। এছাড়া গত বছর এই স্কুল থেকে ২ জন রাজ্যে সপ্তম স্থান অধিকার করেছিলেন। সর্বোপরি ছাত্র-ছাত্রীদের প্রচেষ্টাই এই ভালো ফলাফলের অন্যতম কারণ, মনে করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।