ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ছাড়া অন্য কোনও রাজ্যে সারা বছর ধরে রাজনীতির কচকচানি নেই | তাদের সংস্কৃতিতে একটা বাক্যই যথেষ্ট 'ভোটের দিন পারলে ভোট দেব"। ব্যস, যথেষ্ট। এছাড়া নিজের জীবন নিয়েই ব্যস্ত মানুষ, অন্তত এই করোনা আবহে তো বটেই |
পশ্চিমবঙ্গে একটা সময় সাহিত্যচর্চা, সিনেমা, থিয়েটার, খেলাধূলা, ভ্রমণ, নানারকম খাওয়া-দাওয়া, সর্বোপরি প্রেম করার একটা রীতি ছিল। কিন্তু সঙ্গে ছিল অবশ্যই রাজনীতির বিষয়ে উৎসাহ | সেই সময় প্রতি ঘরে একজন না একজন রাজনীতির মানুষ থাকবেনই | আজও রাজনীতি আছে এবং বিভিন্ন খবরের চ্যানেলে সেইসব খবর প্রতিনিয়ত সম্প্রচারিতও হচ্ছে।
আজকের প্রজন্মের অনেকের মধ্যে ভারতীয় সংস্কৃতির অনেক কিছুই নেই | নেই বাংলার সংস্কৃতিও। কিন্তু তারা যথেষ্ট জ্ঞানী | তা হলেও রবীন্দ্রসাহিত্য তাদের উৎসাহিত করে না | রবিঠাকুরের গানও টানে না তাদের | উত্তমকুমার বা চূনী গোস্বামীর নাম তারা নিশ্চই শুনেছে, কিন্তু তাদের বিষয়ে উৎসাহ নেই কারও | প্রশ্ন করলে উত্তর দেয়, কী হবে জেনে | তারা যদি উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবারের হয়, তবে তারা সর্বদা ব্যস্ত কেরিয়ার নিয়ে | চাকরি পেলে প্রথম প্রশ্ন 'কি প্যাকেজ পাবো'? খেলাধূলা নিশ্চই পছন্দ করে, তবে টি টোয়েন্টি ক্রিকেট অথবা বার্সিলোনা বা ম্যানচেস্টার কী করলো, তা নিয়েই আগ্রহ বেশি। সিনেমা তারা দেখে নিশ্চই। তবে লাইন দিয়ে টিকিট কাটতে হবে ভেবেই অনুৎসাহ তাদের |
রাজনীতির বিষয়ে তো একেবারেই উৎসাহিত নয় তারা | ভোট বা গণ্ডগোলের খবর তারা পায় নিশ্চই। কিন্তু 'চুলোয় যাক সব' বলেই পাত্তা দেয় না | এটা বাস্তব যে একটা তরুণ প্রজন্ম নিশ্চই রাজনীতি করে। তবে তার সংখ্যা নেহাতই কম | আগামী দিন তো তাদেরই, রাজনীতিবিদরা শুনছেন কি ?