আজ থেকে পাঁচ বছর আগে বিজেপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিল উত্তরপ্রদেশে, মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দলের হিন্দুত্বের মুখ যোগী আদিত্যনাথ। যদিও প্রচারের মুখ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই। আসলে মোদী ছাড়া বিজেপির এখনও কোনও মুখ নেই। মোদী দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সংঘ পরিবার বুঝেছিল যে, দেশের বিরোধী দলগুলির ছন্নছাড়া অবস্থা। সুতরাং মোদী ছাড়া উপায় নেই। উত্তরপ্রদেশ এমন একটি রাজ্য যেখানে যে দল শক্তিশালী হয়, কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসে তারাই, যা বিগত দিনে দেখা গিয়েছে। গত উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে জেতার পর গুঞ্জন উঠে এসেছিল যে, মোদীর পছন্দের মুখ্যমন্ত্রী না এনে সংঘ পরিবার যোগীকে মুখ্যমন্ত্রী করে। সেবার যোগী শপথ নেওয়ার সময় আমন্ত্রিত প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন ঠিকই, কিন্তু শপথ শেষে 'চা চক্রে' তিনি যাননি। শপথ শেষে দ্রুত দিল্লিতে ফিরে আসেন তিনি।
এবারও যোগীকেই মুখ করে বিজেপি এগোতে চাইছে। এবারেও প্রচারযন্ত্রের দায়িত্ব মোদীর উপর ন্যস্ত করে নিশ্চিন্ত হতে চেয়েছিল সংঘ ও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সমস্যা তৈরি হয়েছে অন্যত্র। এবার জনসভা করা যাবে না, যাবে না রোড শো করা। তবে মোদীর ভোটপ্রচার হবে কী করে? জানা যাচ্ছে, ভার্চুয়ালি মোদী বক্তব্য রাখবেন। কিন্তু ভার্চুয়ালি বা টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করলে দেখবে কজন? সামনে থেকে প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে সবাই চায় এবং মোদীর ভাষণে "মোদী মোদী" ধ্বনির একটি সফল প্রতিক্রিয়া আছে। সেটি না থাকলে পিছিয়ে পড়া সুবিশাল প্রদেশ নাগরিক কতটা উদ্বুদ্ধ হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।
এর উপর বার্তা আরও আছে। যোগীর নিজস্ব জনপ্রিয়তা নিম্নগামী। প্রদেশে গত ৫ বছরে এমন বহু ঘটনা ঘটেছে, যাতে রাজ্যের মানুষ ক্ষুব্ধ যোগীরাজের উপর। বিকল্প মুখের দরকার ছিলই। এরই মধ্যে বিজেপির মন্ত্রী সহ বহু নেতা সম্প্রতি দল ছাড়ছে, যা নিয়মিত হয়ে গিয়েছে। তবে একটাই ভরসা বিজেপির যে, আজও বিরোধী দলগুলি ছন্নছাড়া। ভোট যদি ভাগাভাগি হয়, তবে ফায়দা বিজেপিরই।