বিপুল জয় ফের তৃণমূলের ১০৮টি পৌরসভার ফলাফলে। ১০২টি পৌরসভায় বিপুল জয় এবং ঝুলে রয়েছে নির্দলদের সমর্থনের উপর ৪ কেন্দ্রে, একটি বাম ও একটি নেপালি দল দার্জিলিংয়ে। জয়ের উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। একটি পশ্চিমবঙ্গের মিনি নির্বাচন সমাপ্ত হল বটে, যেখানে বাংলার দিদির ছবি টাঙিয়েই জয় পেয়েছে কয়েকশো প্রার্থী। কারণ কোনও কেন্দ্রেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক প্রচার করার প্রয়োজন বোধ করেননি। কেউ জিতেছেন সামান্য ভোটে, কেউ আবার কয়েক হাজার ভোটে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়টিই সাংগঠনিক শক্তির প্রভাব বলেই ধারণা মানুষের।
কিন্তু তার ফাঁকেই দুই ব্যক্তিত্ব নজর টেনেছেন। প্রথমজন উত্তর দমদমের কংগ্রেসি সুবোধ চক্রবর্তী। এক সময় দমদম ও বিরাটির সংযোগস্থলটি পঞ্চায়েতের মধ্যে ছিল। ১৯৯০-৯১ ও ১৯৯৫-৯৬ এ পঞ্চায়েতে জেতেন। এরপর উত্তর দমদম পৌরসভার মধ্যে চলে আসে ওই অঞ্চলটি। সুবোধবাবু জেতেন ২০০০ এ কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে। ২০০৫ এ এলাকার পর এলাকা দখল করে ভোট করে সিপিএম। কিন্তু সুবোধবাবুকে হারানো যায়নি। এরপর ২০১০ এ তৃণমূল সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে জেতেন। পরেরবার সরাসরি তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে জিতে আসেন। এবার সব থেকে বেশি ভোটে জেতেন সুবোধবাবু, ৭৪০ ভোটে। সিএন পোর্টালকে জানালেন, কোনও সমস্যা ছাড়াই জিততে পেরেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
দ্বিতীয়জন হয়তো এবারের পৌরভোটের সবচেয়ে গরিব ঘর থেকে উঠে আসা চরিত্র দক্ষিণ দমদমের ২৮ বোর্ডের নব্য প্রার্থী বিশ্বজিৎ প্রসাদ। বাবা ড্রাইক্লিনিকের ছোট্ট দোকানি ছিল। খুব একটা ব্যবসা চলত না। দুই ছেলেকে সরকারি স্কুল ও কলেজে পড়িয়েছেন, শিক্ষক রাখার পয়সা ছিল না। প্রতি পুজোতে নতুন জামাকাপড় জুটত না, কিন্তু জুটত স্কুলড্রেস। কারণ ওই পরেই স্কুলে যেতে হবে। একটাই শ্যু দু ভাই ভাগাভাগি করে পড়ত। কিন্তু ছোট থেকেই মমতাভক্ত বিশ্বজিৎ। কলেজ জীবন থেকেই ছাত্রনেতা। এলাকায় বহু সামাজিক কাজ করেছে। আমফান থেকে টিকা, সবেতেই বিশ্বজিৎ। নজরে পড়ে আইপ্যাকের। তারপরই প্রার্থী করা হয়ে তাকে। সুজিত বসুর কাছের বিশুকে জেতাতে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন ওই এলাকায় ভোট কমে যাওয়া দমকলমন্ত্রী। বয়স বোধহয় সবথেকে কম, কিন্তু জিতলেন রেকর্ড ভোটে ৩,২৯৬ ভোটে, যা ওই এলাকায় রেকর্ড।