প্রসূন গুপ্ত: সব্যসাচী দত্ত দীর্ঘদিনের কংগ্রেস কর্মী। সেখান থেকে তৃণমূলে এসে বিধাননগরের দায়িত্ব পান। সব্যসাচীর পাশাপাশি এমন অনেক নেতা আছেন যাঁরা বাম দল থেকে তৃণমূলে যোগ দেন যথা সুজিত বসু, পূর্ণেন্দু বসু, তাপস চট্টোপাধ্যায় বা বাম মনোভাবাপন্ন ব্রাত্য বসু। এরাই বিধাননগর, নিউ টাউন বা দমদম অঞ্চল থেকে দলের উঁচু পদ পেয়েছিলেন। সব্যসাচী কিন্তু দিদির অনুগামী হিসাবে প্রথম দিন থেকে কাজ করেছেন। বাকিদের অনেকেই মন্ত্রী হলেও সব্যসাচীর দায়িত্বে ছিল বিধাননগর পৌরসভা পরে বিধাননাগর কর্পোরেশন।
মাঝে দলের একটি গোষ্ঠীর সাথে সব্যসাচীর প্রবল বিবাদ বাঁধে। শোনা যায় যে তিনি নাকি দলের উচ্চনেতৃত্বকে তা জানিয়েও ছিলেন। সব্যসাচীর সঙ্গে তৎকালীন সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায়ের যথেষ্ট সৎভাবে ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর প্রিয়পাত্রও ছিলেন। পরে মুকুল রায় দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন, কিন্তু যোগাযোগ বরাবরই ছিল সব্যসাচীর সঙ্গে। গোষ্ঠী কোন্দলে এক প্রকার কোনঠাসা হয়ে পড়েছিলেন সব্যসাচী বলে তাঁর অনুগামীদের কাছ থেকে শোনা গিয়েছিল। সবশেষে দল ছাড়েন এবং বিজেপিতে একেবারে অমিত শাহর সৌজন্যে বিজেপিতে যোগ দেন।
সেটা যে ভালো ছিল না, তা সব্যসাচী বহুবার জানিয়েছেন। ২০২১-র নির্বাচনে তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সুজিত বসুর কাছে পরাজিত হন। এই ভোটের আগে থেকেই সব্যসাচী বিজেপিতে খুব সুখী নন, আকারে ইঙ্গিতেও জানিয়েছিলেন। ভোটের আগে সস্ত্রীক তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
সব্যসাচী সিএন পোর্টালকে জানালেন সেদিনের সেই অসহায় অবস্থায় তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নাকি ধমক দিয়ে সব্যসাচীকে বলেছিলেন, দল ছেড়েছিস বলে কি দিদিকেও ছেড়েছিস, আমাকে জানাস নি কেন? এরপর মমতা হাসপাতালের খবর নেওয়া বিশেষ ব্যবস্থা করা ইত্যাদি করেছিলেন। বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলেন সব্যসাচী। পরে ক্ষমতায় ফিরে ফের মমতা ফিরিয়ে নেন সব্যসাচীকে।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ধমক দেন কয়েকজন মন্ত্রীকে বলে সংবাদ। তিনি সুজিত বসুকে বলেন সব্যসাচীর সঙ্গে সমস্যা কী? উত্তর পেয়ে তিনি নাকি পরিষ্কার জানান যে সব্যসাচী তাঁর অত্যন্ত স্নেহের অতএব তিনি বেচাল সইবেন না। সব্যসাচী জানালেন, দিদি শুধু তো সম্পর্কে আসলে তিনি মাতৃসমা।