প্রসূন গুপ্ত, বিধাননগর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড:
যে কোনও ভোটের দিন নানা ছবি উঠে আসে। বেশিরভাগ সময় তা স্বাস্থ্যকর থাকে না। কিন্তু ব্যতিক্রমী চিত্রও তো থাকে।
শনিবার পশ্চিমবঙ্গের ৪টি পুরসভায় ভোটদান শুরু হয়েছে। সকাল ১১ টার মধ্যে ছোটখাট কিছু ঘটনা ছাড়া তেমন কিছু ঘটেনি। আসলে ভোটের দিন ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভোটদানের যে ছবি উঠে আসে, তা সবসময় আনন্দের হয় কি? বাঙালির ভোট বা বাংলার ভোট খুবই শান্তিপূর্ণ হতে পারে সর্বত্র, তা বোধকরি ৫০ বছর ধরে মানুষ ভুলতেই বসেছে। কিন্তু কিছু ছবি তারই মধ্যে উঠে আসে, যা দেখে আমজনতা ভরসা পায়। দেখা গিয়েছে, অতি বৃদ্ধবৃদ্ধারা কোনওক্রমে ভোট দিতে আসছে, ছবি হয়েছে। কখনও নতুন বিবাহিত স্বামী-স্ত্রী ভোট দিতে এসেছে, এমন ছবিও হয়েছে। ছোট্ট নাতি বা নাতনিকে নিয়ে ভোটদানের ছবিও দেখতে পাই প্রায়ই। কিন্তু ভোটকেন্দ্রকে পুজো মণ্ডপের মতো সাজানো হচ্ছে, এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে কি?
বিধাননগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বরাবরই শান্তিপ্রিয় মানুষের পরিচালনায় ভোট হয়ে থাকে। এলাকাটি বাগুইহাটি বাজারের সামনে একটি গলির মধ্যে অন্যতম একটি বুথ। প্রশাসন এলাকায় এসে ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব নেবার আগেই স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা ফুলের মালা দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে বুথের ভিতরে, বাইরে। অনেকটা পুজোর আগে মন্দির সাজানোর মতো সাজিয়ে তুলেছে তারা। নির্বাচন কেন্দ্র বলে মনেই হচ্ছে না। স্থানীয় পুলিশকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি, ভোট খুব শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে। কেউ একজন এসে একটি ফুল দিয়ে গেলেন ভোটকেন্দ্রে। প্রশ্ন করি, হঠাৎ ফুল কেন? ভদ্রলোক জানালেন, কালীবাড়িতে ফুল দিই, দুর্গামণ্ডপে ফুল দিই, তবে এখানে নয় কেন। গণতন্ত্রের পুজো হচ্ছে এখানে, তাই তো পুজো দিতে এসেছি। তিনি বললেন, আমি কোনও দলের সমর্থক নই। কিন্তু আমাদের পাড়ার সংস্কৃতিই এটা। ভোট নয়, ১৭ নম্বরের ভোটাররা পুজো দিতে এসেছে বিধাননগর কেন্দ্রে।
ছবি:লেখক