রাজ্য বিজেপিতে এখন ক্ষমতায় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিধানসভার বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। দিলীপ ঘোষ বিদায়ের পর এখন এঁদের উপরই বর্তেছে দলের ভবিষ্যৎ। দিলীপ ঘোষেরও মাথাব্যথা আছে, কিন্তু যে দায় শুভেন্দু-সুকান্তের, তা দিলীপের নেই।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ১৮টি আসন পেয়ে রাজ্য বিজেপি চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কার্যত সেই কারণে দলের সংগঠনের প্ল্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় ভোট বিশারদ প্রশান্ত কিশোরকে। ওই সময় জিতে সাংসদ হন আজকের সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং সদ্য প্রাক্তন দিলীপ ঘোষ। এরপর দল ছাড়েন শুভেন্দু অধিকারী। মনে রাখতে হবে, ৫ বছর তিনি ছিলেন তৃণমূলের বিধায়ক এবং দায়িত্ববান মন্ত্রী। তার আগে বিধায়ক, সাংসদও ছিলেন। দল ছেড়েই মমতা, অভিষেককে নির্দয়ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন শুভেন্দু।
আসে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন। শুভেন্দু বিজেপির অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন। কিন্তু ভয়ঙ্কর পরাজয় ঘটে রাজ্য বিজেপির। শুভেন্দুর অবশ্য জয় আসে, কিন্তু তাও উচ্চ আদালতে আইনের জটিলতায় রয়েছে। এরপর যতগুলি উপনির্বাচন বা পূরনিগমের নির্বাচন হয়েছে, সবেতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। এরই মাঝে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে রাজ্য সভাপতি করা হয়। ফলে এখন দলের ভালোমন্দের দায়িত্ব এই জুটির উপর বর্তাবে।
সুকান্তবাবুর নিজের কেন্দ্র বালুরঘাট। এখান থেকে তিনি জিতে এসেছেন। এবারের ১০৮টি পৌরসভার মধ্যে বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর পড়েছে সুকান্তর লোকসভা এলাকাতে। পাশাপাশি কাঁথি শহরকে অধিকারীর গড় হিসাবে ধরা হয়। এখানেই শুভেন্দুর উত্থান। দীর্ঘদিন তাঁর বাবা শিশির অধিকারী, পরে অন্য ভাইরা কাঁথি পৌরসভার চেয়ারম্যান হয়েছেন। ২১ আসনে ২১ টিতেই জয় পেতেন শিশিরবাবু। এবার নাকি দল শুভেন্দুর ভাই বা কোনও আত্মীয়কে টিকিট দেয়নি রাজ্য বিজেপি। কিন্তু শুভেন্দুর উপর দায়িত্ব পড়েছে কাঁথি জয় করার। এখন নতুন নেতাদের আগমনে প্রচুর সংঘাত শুরু হয়েছে বিজেপিতে। সুকান্ত এবং শুভেন্দুকে দলের প্রার্থীদের জিতিয়ে প্রমাণ করতে হবে, তাঁদের সাংগঠনিক শক্তি প্রবল। খড়্গপুরেও দিলীপ ঘোষকে প্রমাণ করার বিষয় আছে। কিন্তু দিলীপের দায় আছে, দায়িত্ব নেই।
Ad code goes here
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)