চুঁচুড়া বন্দে মাতরম ভবনে গিয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। দুই দিনের বঙ্গ সফরে এসে এই মন্তব্য করলেন জেপি নাড্ডা। এদিন চন্দননগরে রাসবিহারী রিসার্চ ইনস্টিটিউট ঘুরে দেখেন তিনি। তিনি জানান, এই জায়গাগুলো ঘুরে নতুন উন্মাদনা নিয়ে ফিরব। বঙ্কিমচন্দ্র দেশকে দিশা দেখিয়েছেন, উনি আমাদের রাষ্ট্রীয় সঙ্গীতের রচয়িতা। এভাবেই 'বঙ্কিমবাবুর' প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। এদিন ন্যাশনাল লাইব্রেরির বিজেপি রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে বাংলার সংস্কৃতি এবং মনিষীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন জেপি নাড্ডা।
এদিন তিনি বলেন, 'বাংলার মনীষীদের প্রণাম জানাই। যেভাবে কাল আমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে, তা নতুন হাওয়ার সঙ্কেত দেয়। রাজনীতিতে কখন কোনও জিনিস স্থায়ী নয়। কোন শক্তির সঙ্গে লড়াই হবে সেটাই বিবেচ্য।'
তিনি জানান, ৪০ বছর আগে কংগ্রেসি নেতারা বলতেন আমি রাজনীতি বুঝি না। আমাকে ভুল দলে ঠিক লোক বলতেন কংগ্রেসি বন্ধুরা। সেই সময় ওদের কথায় প্রভাবিত হলে আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় দলের সদস্য আমি হতে পারতাম না। আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, কোনটা ভুল দল, আর কোনটা ঠিক। বিজেপিতে যারা আছেন, তাঁরা সৌভাগ্যবান।
রাজ্যের শাসক দলের প্রতি তোপ দেগে জেপি নাড্ডা বলেন, 'তৃণমূলে নেতা আছে, নীতি নেই। শুধু খাও, খাও, এসো, এসো। তৃণমূল মানেই সিন্ডিকেট। আজ প্রাদেশিক দলগুলো পারিবারিক দল হয়ে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসও এখন ভাই-বোনের দল হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল পিসি-ভাইপোর দল হয়ে গিয়েছে।'
তাঁর হুঁশিয়ারি, 'আগামি দিনে তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের সঙ্গে গণতান্ত্রিকভাবে খুব তাড়াতাড়ি বাংলাতেও সরকার গড়বে বিজেপি।' তাঁর পরামর্শ, 'নিজের নীতি, আদর্শ, সঙ্কল্প নিয়েই চলো, কেউ আগে জানত না কংগ্রেস মুক্ত ভারত হবে। এখন কংগ্রেস মুক্ত নয়, কংগ্রেস লুপ্ত ভারত হতে চলেছে।'
নাড্ডার দাবি, 'মোদীজির আমলে দেশে গরিবি ১২% কমেছে, প্রায় ২০০ কোটি মানুষ করোনা টিকা নিতে পেরেছে। তারপরেও আমরা ৪৮টি দেশকে টিকা পাঠাতে পারছি। ভারত এখন নেয় না, দেয়। আমেরিকার থেকেও এগিয়ে ভারতের আর্থিকবৃদ্ধি।'
তাঁর অভিযোগ, 'কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলোর নাম বদলে চালাচ্ছে বাংলার সরকার। স্বচ্ছ ভারত এখানে নির্মল বাংলা, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা এখানে খাদ্যসাথী। তাই আপনারা মানুষকে বলুন যে কেন্দ্রের কোন কোন প্রকল্পগুলোর সুযোগ থেকে আপনারা বঞ্চিত।' এদিন মনরেগা বকেয়া প্রশ্নেও মমতা সরকারকে তোপ দাগেন বিজেপি সভাপতি। তাঁর অভিযোগ, 'তিন বছর ধরে বাংলার সরকার হিসেব দিচ্ছে না মনরেগার। উনি শুধু বলছেন টাকা দিচ্ছে না, টাকা দিচ্ছে না। কীভাবে দেবে টাকা? আগে হিসেব দিন, রশিদ জমা করুন, সঠিকভাবে টাকা নিয়ে যান।'
আপনাদের রাজ্যবাসীকে বোঝাতে হবে মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। আর এভাবেই গণতান্ত্রিকভাবে রাজ্যে সরকার বদলে ফেলতে হবে। এভাবেও সরব ছিলেন জেপি নাড্ডা। বুধবার তিনি বলেছেন, এখন মাঝে মধ্যেই লালুপ্রসাদকে শুনানির জন্য হাজিরা দিতে হচ্ছে। আজ থেকে কুড়ি বছর আগেও কেউ এটা ভাবতে পারেনি। আপনারা শুনে রাখুন আগামি দিনেও পিসি-ভাইপোকেও প্রত্যেক শুনানিতে হাজিরা দিতে হবে। কারণ এই দেশে আইনের শাসন চলে। আইন, আইনের পথেই চলবে। এভাবেও সরব ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।