পাটশিল্পের (Jute industry) পুনরুজ্জীবন চেয়ে আন্দোলনের ডাকের মধ্যেই কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী (Textile Minister) দিল্লিতে ডাকলেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে (MP Arjun Singh)। মূলত মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন ব্যারাকপুরের এই বিজেপি সাংসদ। তাই দলীয় সাংসদের মানভঞ্জনে তাঁকে তড়িঘড়ি ডেকে পাঠাল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অর্জুন সিংয়ের এই দিল্লি সফরের মধ্যে পীযূষ গোয়েলের সঙ্গেও বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে সাংসদের। এমনটাই সূত্রের খবর। শনিবার বেলার দিকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন বিজেপি সাংসদ।
কলকাতা বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, 'জুট ইস্যুতে আমি দু'বার চিঠি দিয়েছি পীযূষ গোয়েল মহাশয়কে। দুপুরে হঠাৎই ফোন আসে যে আপনি চলে আসুন, জরুরি বৈঠক আছে আপনার সঙ্গে। শনিবার রাত ১০টায় বৈঠক। দেখা যাক, বৈঠক থেকে কী বেরিয়ে আসছে।'
তাঁর দাবি, 'পাট শিল্প এবং পাট চাষিদের বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করুন মুখ্যমন্ত্রী।' ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ।এদিকে, শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের আরও চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জুট শিল্প নিয়ে আন্দোলন চেয়ে চিঠি লেখেন অর্জুন সিং। তারপরেই তিনি কি এবার বিজেপিতে বেসুরো? এমন জল্পনা শুরু হয়। সেই জল্পনা প্রসঙ্গে ব্যারাকপুরের সাংসদ বলেন, 'কে কী ভাবছে আমি জানি না। কিন্তু আমি একটা জিনিস স্পষ্ট জানি, জুটমিল আমার মা-বাবা। শ্রমিকদের জন্যই আজ আমি একটা কাউন্সিলর থেকে সাংসদ হয়েছি। এই লড়াইটা হাতে নিয়েছি, কিছু একটা হেস্তনেস্ত করব বলে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যখন ডেকেছেন, তখন কিছু একটা রাস্তা বের করার জন্যই ডেকেছেন। কিন্তু যে রাস্তাই বেরোবে, সবটাই শ্রমিক এবং কৃষকদের হিতেই হওয়া দরকার। শ্রমিক-কৃষক ইন্ডাস্ট্রি বনাম বস্ত্র মন্ত্রকের যে জুট কমিশনার, তাদের লড়াই। এই লড়াই আর কোনও শ্রমিক আর মালিকের নেই। এটা একটা অদ্ভুত লড়াই। এর উপর যদি বস্ত্র মন্ত্রক নজর না দেয়, ব্যাপক ক্ষতি হবে।'
অপরদিকে, জুটমিলগুলির সামনে তৃণমূলের অবস্থান-বিক্ষোভ চলছে। সেই প্রতিবাদে ব্যারাকপুরের সাংসদের সমর্থন রয়েছে? জবাবে তিনি বলেছেন, 'আমি এই আন্দোলনের সঙ্গে আছি, আন্দোলনে শামিল হব, যারা আন্দোলনের সঙ্গে থাকবে সবাইকে আমি সাধুবাদ জানাবো। পাঁচজন মুখ্যমন্ত্রীকেও বলেছি, যে আপনাদের ওখানে পাট চাষ হয়, জুট মিল আছে। আপনারাও আন্দোলনে শামিল হোন'
এদিকে, বিজেপি সাংসদের এই অবস্থান প্রসঙ্গে দলের অপর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বস্ত্র মন্ত্রকের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, 'অর্জুন সিং লড়ছেন ভালো। কেন্দ্রীয় সরকার জুটের ব্যাগে ১০০ শতাংশ ভর্তুকি দেয়। সরকার একটা নীতি নিয়ে চলবে। এখানে সমস্যা সমাধানের দায় তাদের, যারা এতদিন ধরে ইনকাম করে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের জুট শিল্প নিয়ে কেন এত অভিযোগ?'
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, 'চটশিল্প নিয়ে কেউ পথে নামলে ভালো। কিন্তু অর্জুন সিং যখন তৃণমূলে বিধায়ক তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হতে দেখেনি। এখন বিজেপির সাংসদ হিসেবে লোকসভায় সরব হয়নি। এখন কী উদ্দেশ্যে এই আর্জি?'