২৮ মার্চ, ২০২৪

TMC: 'আমি নেতা নই আপনার বন্ধু থাকতে চাই', নতুন পদ পেয়ে আপ্লুত তাপস রায়
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-01-05 12:53:02   Share:   

তাপস রায় (বিধায়ক ও বিধানসভার উপ-মুখ্যসচেতক): আরও একটি সাংগঠনিক দায়িত্ব পেলাম বুধবার। দমদম/ব্যারাকপুর অঞ্চলের (জেলা ভিত্তিক) সভাপতির পদ। আমার নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বরানগর এই অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। পদ পাওয়া মানেই কাজ করা এই নীতিতে আমি বিশ্বাসী নই, মানুষের বিশ্বাস ভরসার জন্য লড়াই করতে আমরা বাধ্য। তবে দায়িত্ব যখন দলনেত্রী দিয়েছেন তখন এলাকার উন্নয়নের কাজ করতে হবে আরও বেশি করে। অবশ্য ২০১১ থেকে বাম জমানার অনিয়মকে ভেঙে এবং পশ্চিমবঙ্গকে উন্নত করতে আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিবারাত্র পরিশ্রম করেছেন। সেই কাজকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে নেত্রীর নির্দেশে। 

আমাদের পরিবার বরাবর কংগ্রেসি ঘরানার। আমি বীরভূমের বদ্যি, একসময় আমরাই চিকিৎসার কাজে নিযুক্ত ছিলাম অবশ্য সেসব আদি ইতিহাস। কলকাতায় বড় হয়েছি, সেন্ট পলস কলেজে পড়তে পড়তেই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ি। আমি কোনওদিন লবির রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। কংগ্রেস যখন করেছি তখন দলের নির্দেশ মেনেই রাজনীতি করেছি। স্নাতক হয়ে আইন পাঠে যোগ দিই। পাশ করে একসময় প্রয়াত অজিত পাঁজার সঙ্গে নিয়মিত হাইকোর্ট করেছিলাম। পরে একাই ওকালতি শুরু করেছিলাম। ৮০-র দশকের মধ্যভাগ থেকে যিনি বাংলার রাজনীতিতে উঠে এলেন তিনি আমাদের নেত্রী।

অন্যদিকে আমি পুরোদস্তুর ছাত্র পরিষদের কাজ করছিলাম। ১৯৯০-এ ছাত্র পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হই বাংলায়। সংগঠনের কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার নতুন কাজ কিছু নয়। সারা বাংলায় একটা সময়ে এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে দৌড়তে হয়েছে। কাজেই আমার নতুন দায়িত্বের অভিজ্ঞতা আমি নিশ্চিত দায়িত্বের সঙ্গে পালন করতে পারবো। আগেও তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর কলকাতার দায়িত্বে ছিলাম।

দেখুন রাজনীতিতে ভোট থাকবেই। আমার এই ভোটযুদ্ধের অভিজ্ঞতা প্রথম দিকে সুখের ছিল না। কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে বৌবাজারের একটি কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছিলাম, পাশের কেন্দ্রে ছিলেন প্রদীপ ঘোষ। ভোটের দিন বোমাবাজি এবং সিপিএমের গুণ্ডামিতে বুঝলাম ওরা জিততে দেবে না। আমার ওয়ার্ডে প্রবল গণ্ডগোল অথচ প্রদীপবাবুর এলাকায় অবাধ নির্বাচন হয়েছিল। তিনি জিতেও ছিলেন। এরপর ৯১-এ বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়াই সোমেন মিত্রের বাড়ির সামনে একদা বিদ্যাসাগর কেন্দ্র থেকে। ফের বোমাবাজি এবং গুন্ডামি।

তিক্ত অভিজ্ঞতায় বুঝলাম, হয় বামেদের সঙ্গে সমঝোতা করতে হবে নতুবা হারতে হবে। কারণ আমার একটা বাম বিরোধী ইমেজ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। আমি ১৯৯৬ অবধি ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছিলাম তার মধ্যে কোনও এক অজানা কারণে আমাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। তখন থেকেই দলের উপর একটা অভিমান জন্মে যায়। একদিকে আমরা লড়বো, অন্যদিকে কেন্দ্র-রাজ্যের ভাব-ভালোবাসা চলতে পারে না। গত শতাব্দীর শেষে কংগ্রেস ছেড়ে দিলাম। চিরকালই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছি, শুরু হল তৃণমূল কংগ্রেসে পথ চলা।

আজকেও সেই পথেই চলেছি। আজকের প্রজন্মের তরুণ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দারুন কাজ করছেন। নব্য নেতৃত্ব দলের পক্ষে শুভ বলেই মনে করি। এদিকে, আমার দায়িত্ব বাড়ল। নতুন বছরে আশীর্বাদ করুন যেন আপনাদের সবার প্রতিনিধি হয়ে বাংলায় কাজ করতে পারি। আমি নেতা নই আপনার বন্ধু থাকতে চাই।  (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)


Follow us on :