Share this link via
Or copy link
প্রসূন গুপ্ত: পশ্চিমবঙ্গের নেতা বা এ রাজ্যের যেকোনও মানুষ ত্রিপুরায় গেলে প্রথম সমস্যা যা হয় তা ভাষা। ত্রিপুরার বাঙালিরা নিশ্চিত বাংলা বলে কিন্তু তা কুমিল্লা ও নোয়াখালী মিশ্রিত পূর্ববঙ্গীয় 'বাঙাল' ভাষা। তাঁরা সবাই অবশ্যই শুধু বাংলা অর্থাৎ নদিয়ার বাংলা জানে। অথবা স্কুল বা কলেজে কিংবা যেকোনও মঞ্চ অনুষ্ঠানে সে রাজ্যের মানুষ শুদ্ধ বাংলা ব্যবহার করলেও তাদের কথায় একটা পূর্ববঙ্গীয় টান থাকে এবং এতেই তাঁরা গর্বিত। সত্যি বলতে বাংলাদেশে গিয়ে শুধু বাংলায় কথা বললে সমস্যা নেই কিন্তু ত্রিপুরায়, সে রাজ্যের অধিবাসীরা ওদের বাংলাকেই পছন্দ করে। বাস্তব এই যে শুদ্ধ বাংলা বললে সাধারণ মানুষ কিছুটা অবাক হয়। তাঁরা নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে অবোধ থাকতে চায়।
বিপ্লব দেব দীর্ঘদিন দলের কাজে উত্তর ভারতে ছিলেন, কাজেই তাঁর কথায় হিন্দি এবং হিন্দি মিশ্রিত বাংলা ছিল। এটাই কিন্তু তাঁর প্রথম নেতিবাচক দিক, পরে অবশ্য মানিক সাহা তাঁর স্থলে আসতে অনেকটাই ড্যামেজ কন্ট্রোল হয়েছে। মোদী হোক কিংবা মমতা অথবা শুভেন্দু, তাঁরা ত্রিপুরার মন জয় করার চেষ্টাতে ত্রুটি রাখেননি। কিন্তু দুটি দলের মধ্যে যাঁরা কিছুটা বাঙাল ভাষা বলতে পেরেছেন ওই রাজ্যে তাঁদের সুবিধা হয়েছে অনেক। যেমন তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব অথবা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে ত্রিপুরাবাসীর অন্যতম প্রিয় খাদ্য 'সিদল' বা শুটকি মাছ যা কিনা বাংলার মানুষ সেভাবে খেতেই পারেন না। তবে ত্রিপুরাবাসী বইপত্র ও গানবাজনা খুব ভালোবাসে এবং সংস্কৃতি তাদের মধ্যে প্রবলভাবে বিদ্যমান |
বিজেপিই ফের ক্ষমতায় আসবে নাকি, জোট সে তর্ক পরে কিন্তু একটি বিষয় সত্যি ত্রিপুরাবাসী নিশ্চিত চায় যে তাদের নিজের লোক দায়িত্বে আসুক। বাংলার 'ঘটি' নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় হাড়েহাড়ে তা বুঝেছেন, যা বুঝেছিলেন মুকুল রায় বা সব্যসাচী দত্ত। আর একটি বিষয় এ বাংলার সঙ্গে যার খুব মিল তা, একবার ত্রিপুরা যাকে ক্ষমতায় আনে, তাদের চট করে সরিয়ে দিতে চায় না। সিপিএম এই বিষয়টি খুব ভালো জানে তাই তারা নিজেদের উপর ভরসা না করে জোট করেছে। তবুও একটা কিন্তু থেকেই যায়। (চলবে)