LATEST NEWS
29 May, 2023

Anubrata: 'প্রভাবশালী' বলেই জেলে থেকেও জেলা সভাপতি কেষ্ট !
CN Webdesk      শেষ আপডেট: ২০২৩-০৩-২৪ ২০:৩৫:৫৫   Share:   

মনি ভট্টাচার্য: অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) রাজ্য রাজনীতির (Politics) একটা বৃহৎ কাণ্ডারির নাম? বৃহৎ বিশেষণ কি বাড়াবাড়ি লিখছি? আমি ভুল লিখছি কিনা সেটা আপনারা, পাঠকরা বিচার করবেন। কিন্তু তৃণমূলের (TMC) কাছে, অনুব্রত মণ্ডল যে একজন রাজ্য রাজনীতির বৃহৎ চরিত্র, সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে স্বয়ং শাসক দল তৃণমূল। না হলে কি দীর্ঘ ৮ মাস গ্রেফতারির পরেও তিহার জেলে থেকেও জেলা সভাপতি থাকা যায়? সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য রাজনীতি-সহ গোটা দেশে এমন কোনো নজির নেই। কোন নেতা জেলে থেকে সামলেছেন সংগঠন, বিশেষ করে শাসক দলের জেলা সভাপতির মতো পদ? শুক্রবার কালীঘাটের বৈঠকের পর তৃণমূল সুপ্রিমোর নির্দেশে অনুব্রতই যে বীরভূমে জেলা সভাপতি থাকবেন সে কথা জানিয়ে দেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।


Ad code goes here

অনুব্রত মণ্ডল কোনও বিধায়ক নয়, কোনও সাংসদ নয়, কোনও মন্ত্রী নয়। অথচ অনুব্রত মণ্ডলের নামে নাকি একই গ্লাসে জল খেয়েছে, ওই জেলার প্রশাসনিক কর্তা, দলীয় নেতৃত্ব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও। এমন অভিযোগ বারবার করছে বিরোধী শিবির। কারণ একটাই, মাননীয় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভরসা যোগ্য ভাই তিনি, কেষ্ট মণ্ডল। একটু খোঁজ নিলেই জানা যাবে, অনুব্রতর রাজনৈতিক গুরু প্রদ্যুৎ গুহ, যিনি প্রয়াত কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের একদা আপ্ত সহায়ক ছিলেন।

Ad code goes here

প্রদ্যুৎ বাবুর হাতে ধরেই রাজনীতির পাশাপাশি বামেদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন অনুব্রত। নানুর-সহ বীরভূমে বামেদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একসময়ের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। তারপর ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। বছর পাঁচেকের মধ্যে বদলে যায় অনেক চিত্র। সে বদলে যাওয়া চিত্র তো এখন সবার চোখের সামনেই। যত বেশি কেন্দ্রীয় সংস্থা সক্রিয়, তত বেশি করে ছাড়ানো হচ্ছে পিঁয়াজের খোসা।

Ad code goes here


Ad code goes here

এই বাংলার সাড়ে ১০ কোটি মানুষের এমন কেউ কি আছেন যে অনুব্রত মণ্ডলকে চেনেনা না। এমনকি তাঁর গুনের কীর্তি পৌঁছেছে দিল্লিতেও। কান পাতলে এই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ২০২২ সালে ১১ অগাস্টে গরু পাচার মামলায় সিবিআই কেষ্টকে গ্রেফতার করে। বারবার বিভিন্ন অজুহাতে সিবিআইয়ের জেরা এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ ছিল, সে কারণেই বীরভূমের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি অনুব্রতকে বাড়ি গিয়েই গ্রেফতার করে সিবিআই। সময় গড়িয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে সক্রিয় সিবিআই-ইডি। কিন্তু আজও যেন না থেকেও বীরভূমের আছেন তিনি।

Ad code goes here

যদিও পঞ্চায়েত ভোটের স্বার্থে ওই জেলায় 'অবজারভার' স্বরুপ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক, ফিরহাদ হাকিম ও পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। এই তিন জনের কেউই জেলার নেতৃত্ব নয়। এদিকে কাজল শেখকেও চুপ থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য করার বিষয়, শত শত অভিযোগ থাকার পরেও, প্রায় ১৬ পক্ষ জেলে কাটানোর পর আজও অনুব্রত বীরভূমের 'দোর্দণ্ডপ্রতাপ' জেলা সভাপতি। যিনি কিনা সম্প্রতি ইডিকে জানিয়েছেন, আমার সঙ্গে দল আছে। সেই প্রতিদান কি দল ফিরিয়ে দিল রাজ্য রাজনীতির কেষ্ট মণ্ডলকে? প্রশ্ন আসছে সাধারণের মনে।

Ad code goes here

তাই যদি হয়, এতে কি আমাদের আপত্তি থাকার কথা? না, একেবারেই নয়। কিন্তু কিছু প্রশ্নের উত্তর সত্যিই জানতে ইচ্ছে করে? কুন্তল ঘোষ হুগলি জেলার যুব তৃণমূলের নেতা ছিলেন, শান্তনু বন্দোপাধ্যায় হুগলির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন শাসক দলের মহাসচিব। অনুব্রতর পাশাপাশি অন্য একটি মামলা অর্থাৎ শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন উল্লিখিত এই তিন জন। অথচ তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি কেবল তাঁদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিল কেন?

Ad code goes here

বীরভূম কী এমন জেলা? যে জেলার সভাপতি এত ক্ষমতাবান! রাঙামাটির এই জেলা থেকে গরু পাচারে অভিযুক্ত হিসেবে একাধিক ব্যক্তি এখন গারদের পিছনে। বিরোধীরা বলেন, 'এই জেলায় আবার নাকি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে উন্নয়ন।' এখন গরু পাচার, উন্নয়ন এবং দীর্ঘদিন জেলে থাকার পরও অনুব্রতর জেলা সভাপতি থেকে যাওয়া, বিষয়গুলিকে একসঙ্গে আঁকুন। রাজনীতির একটা বৃহৎ চেহারাই পাবেন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে অনুব্রত রাজ্য রাজনীতির একটা বৃহৎ নাম, বিষয়টা পোয়েটিক জাস্টিস নয় কি?

Ad code goes here

Ad code goes here

Ad code goes here

Follow us on :