অশান্ত আর্থিক সঙ্কটে জেরবার শ্রীলঙ্কা। দেশরে প্রেসিডেন্ট এবং প্রাইম মিনিস্টারের বাস ভবনের দখল নিয়েছে সাধারণ মানুষ। পথে নেমে প্রেসিডেন্ট-প্রাইম মিনিস্টারের পদত্যাগের দাবিতে সরব আম আদমি। এই আবহে বুধবার ইস্তফার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জি রাজাপক্ষে। তাঁর সরকারের পতন হলে দ্বীপরাষ্ট্র সর্বদলীয় সরকার। এমনই ইঙ্গিত দিয়েছে পার্লামেন্ট সচিব। পড়শি রাষ্ট্রের এহেন অবস্থায় সাধারণ মানুষের পাশে রয়েছে ভারত। রবিবার এই আশ্বাস দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
তিন দিনের কেরল সফরে এস জয়শঙ্কর। রবিবার তিরুঅনন্তপুরমে বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'আমরা বরাবর শ্রীলঙ্কার পাশে। আমরা তাঁদের সাহায্যের চেষ্টা করছি। নাগরিকরা এখন সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। আমাদের দেখতে হবে, ওঁরা কী করেন।' সাংবাদিকদের তরফে প্রশ্ন করা হয় লঙ্কান শরণার্থীরা কি এদেশে আশ্রয় পাবেন? সেই সমস্যার কথা উড়িয়ে জয়শঙ্কর বলেন, 'এখন আপাতত কোনও শরণার্থী সমস্যা নেই।'
এদিন পৃথকভাবে বিবৃতি দিয়েছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকও। তারা জানিয়েছে, ‘শ্রীলঙ্কার মানুষের পাশে রয়েছে ভারত। গণতান্ত্রিক নীতি, মূল্যবোধ, প্রতিষ্ঠান এবং সাংবিধানিক পরিকাঠামোর মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার মানুষ দেশের আর্থিক সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের পথ বুঝে নিতে চাইছেন।’ এদিকে, শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিস্থিতি যত খারাপ হচ্ছে ততই যেন জনরোষ বাড়ছে। শনিবার ব্যারিকেড ভেঙে উত্তেজিত জনতা রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবনের দিকে এগিয়ে গেলে পুলিসের সঙ্গে তাদের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিস শূন্যে গুলি চালায়। যদিও শনিবারই তাঁর এই বাসভবন ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় কার্যত পালিয়ে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীরা আজ, রবিবার কলম্বোতে লঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের ব্যক্তিগত বাসভবন ভাঙচুর করে, আগুন লাগিয়ে দেয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হলেও তারা প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি ভেঙে দিতেও দেখা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, রনিল বিক্রমাসিংহ, মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এই পরিস্থিতির জেরে রবিবার তিনি টুইট করে বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা এবং সকল নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। দলীয় নেতাদের ও জনগণের সর্বোত্তম সুপারিশ গ্রহণ করলেন।