১৯৮৭ সালে ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন। ১৯৮৯ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে প্যারোলে মুক্তি, তারপর থেকে ২০২২ পর্যন্ত গা ঢাকা দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। প্রায় সাড়ে তিন দশকের তল্লাশি শেষে অবশেষে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে হাথরস জেলা পুলিস। দিল্লি থেকে এই পলাতক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ৩৩ বছর পর ফের হাজতে ঢুকিয়েছে তারা। জানা গিয়েছে, ধর্ষণে অপরাধী সাব্যস্ত এই ব্যক্তির নাম রঘুনন্দন সিং। হাইকোর্টের নির্দেশে ১৯৮৯-এ প্যারোলে মুক্তি পেয়েই স্ত্রীকে নিয়ে হাথরস ছাড়ে সে।
নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়ে দিল্লির বুরারিতে আশ্রয় নেয় রঘুনন্দন। পোশাকের দোকানে সে কাজও জুটিয়ে নেয়। ফলে একদম 'ভ্যানিশ' হয়ে যাওয়া রঘুনন্দনকে মৃত বলে ধরে নেয় গ্রামের পড়শি এবং আত্মীয়রা। কিন্তু ৩৩ বছর পর ফের তাঁকে দেখতে পেয়ে যারপরনাই বিস্মিত গ্রাম।
পুলিস জানতে পেরেছে, জমি-সম্পত্তি বিক্রির টাকায় দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়ে বসার ফাঁদ পেতেছিল সে। হাতে মোটা অর্থ থাকায় এবং পরে দর্জি হিসেবে কাজ করায় সেভাবে অর্থাভাবে পড়তে হয়নি তাকে। তাই পুলিসের পাতা ফাঁদেও পা দিতে হয়নি রঘুনন্দনকে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে হাথরসের পুলিস সুপার বিনীত জয়সওয়াল সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ১৯৮৬-র হাথরসে একটি ধর্ষণের ঘটনায় ১৯৮৭-তে দোষী সাব্যস্ত হয় রঘুনন্দন। স্থানীয় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। দু'বছর জেল খেটে ১৯৮৯-তে ইলাহাবাদ হাইকোর্টে প্যারোলের আবেদন জানায় সে। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করলে ছাড়া পায় সে।
জেল থেকেই বেরিয়েই গ্রাম স্ত্রীকে নিয়ে গ্রাম ছাড়ে রঘুনন্দন। উত্তর প্রদেশ থেকে দিল্লি পাড়ি দিয়ে বুরারিতে আশ্রয় নেয় সে। নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়ে একটি পোশাকের দোকানেও কাজ নেয় রঘুনন্দন। এদিকে প্যারোলের মেয়াদ শেষে আসামি জেলে না ফেরায় বিপাকে পড়ে পুলিস। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয় আদালত।
এরপর রঘুনন্দনের খোঁজ চালাতে পুলিস তল্লাসি অভিযান শুরু করে। তার আত্মীয়দের এবং গ্রামে গিয়ে খোঁজ নিলেও শূন্য হাতে ফেরে পুলিস। স্থানীয় পঞ্চায়েত জানায়, রঘু মারা গিয়েছে। কিন্তু তাতেও ভাটা পড়েনি পুলিসি অভিযানে।
এবার প্রায় সাড়ে তিন দশক রঘুর খোঁজে হন্যে হয়ে ঘোরা পুলিস খবর পায়, দিল্লিতে এক ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে। যাকে হুবুহু রঘুর মতো দেখতে। সেটুকু সূত্রও ছাড়তে চায়নি পুলিস। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। দিল্লি পুলিশের সহযোগিতায় বুরারিতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় রঘুনন্দনকে।