সোমবার সকলের নজর ছিল বিহারে কী হয়, তার দিকে। অর্থাত্, সরকার টিকবে কি না, তা জানতেই আগ্রহী ছিলেন সবাই। শেষ নির্বাচনে এনডিএ জোট কোনওক্রমে সরকার গঠন করতে পেরেছিল। সরকারে ছিল বিজেপির ৭৭, নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেডের ৪৫, অন্যান্য ৪ ও এক নির্দল ১। সব মিলিয়ে ১২৭ সরকারের পক্ষে, যেখানে আসন সংখ্যা বিহার বিধানসভায় ২৪৩। জোটের দ্বিতীয় শক্তি হওয়া সত্বেও নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই এই জোটের বিরোধী ছিলেন জেডিইউ-এর বিধায়করা। তাঁরা জানিয়েছিলেন, যেভাবে বিজেপি চিরাগ পাশোয়ানের দলকে জেডিইউ-এর বিরুদ্ধে গোঁজ প্রার্থী করে ভোটে তাদের আসন সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছিল, তাতে সরকারেই যেতে চাননি তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, এটা বিজেপির চক্রান্ত।মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসার পর দ্রুত নীতীশ কুমার বুঝলেন, তাঁর সচিবদের অধিকাংশই বিজেপি ঘনিষ্ঠ। সূত্র মারফত জানা যায়, তাঁকে একপ্রকার প্যাঁচে ফেলে বকলমে বিজেপিই রাজ্য চালাচ্ছে, যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা গৌণ। দ্রুত কেন্দ্রের মন্ত্রিসভায় তিনি কোনও প্রতিনিধিকে মন্ত্রী করতে চাননি। পরে খানিক মিটমাট হলেও সম্পর্কে ফাটল ধরেই ছিল বলে সংবাদ।ইদানিং নীতীশ তাঁর প্রধান বিরোধী লালুপ্রসাদের দল আরজেডির সঙ্গে এবং দলের প্রধান তেজস্বী যাদবের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। ২৪৩ আসনের বিহারে আরজেডির সবথেকে বেশি আসন ৮০। এছাড়া কংগ্রেসের ১৯, বামেদের ১৬। ফলে যদি বিজেপির হাত ছেড়ে বিরোধীদের সঙ্গে জোট গড়েন নীতীশ, তবে সরকারের আসন সুবিশাল হবে।এরই মধ্যে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর, নব রাষ্ট্রপতির শপথের দিন আমন্ত্রণ থাকা সত্বেও নীতীশ অনুপস্থিত ছিলেন। রবিবারের নীতি আয়োগের অনুষ্ঠানে যাননি তিনি। জানা গেল, রবিবার দীর্ঘ সময় ধরে সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। কথা হয়েছে তেজস্বীর সাথেও। কার্যত দিল্লি বিজেপি ভাবতে শুরু করেছে, ব্র্যান্ড মহারাষ্ট্র কি এবার উল্টো পথে যেতে শুরু করেছে? ভাঙনের পথে কি বিহার সরকার?
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)