একটা বিল্ডিংয়ের সামনের লনে রাখা ছোট্ট একটা টেবিল (Table)। তার উপর রাখা খাবারের প্লেট (Plate)। সামনে কালো ব্লেজার পরা এক ব্যক্তি। আর তাঁর পিছনেই কুপন হাতে নিয়ে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অগণিত মানুষ। কোনওরকমে ওই কালো ব্লেজার পরা ব্যক্তির হাতে কুপনখানা ধরিয়ে দিয়েই, তাঁর হাত থেকে ছোঁ মেরে প্লেটখানা নিয়ে নিচ্ছেন। প্লেটের সারির উচ্চতা যত কমছে, পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর মনে অস্থিরতা বাড়ছে ততোধিক।
কয়েক সেকেন্ড বাদেই উত্তেজনা (Tension) উঠল চরমে। কুপন (Coupon) দেওয়ার কোনও বালাই নেই। পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজন রীতিমতো প্লেট কেড়ে নিলেন। ব্লেজার পরা ব্যক্তিটি নিয়ম মেনে প্লেট যাতে সবাই পান, সেই কারণে প্লেটের সারিটিকে ডানদিক থেকে বাঁদিকে সরালেন। তাতেও শেষরক্ষা হল না। মানুষজন হুড়োহুড়ি করে প্লেটগুলি একপ্রকার ছিনিয়েই নিলেন।
Lunch time of Principals and Teachers in Punjab after meeting CM. Time to go to HEYWARD. CM might have gone home with some HEYWARDS. pic.twitter.com/bDwF1HooCm
— Abhijit Guha (@Abhijit33886372) May 11, 2022
এমনই একটি ভিডিও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল (Viral)। আর ভিডিওটি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media) প্রশ্ন উঠছে, এঁরা কারা? যাঁরা নিয়ম মেনে খাবারের প্লেট না নিয়ে, রীতিমতো হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন?
অনুসন্ধান করতে গিয়ে যা জানা গেল, তা আরও তাজ্জব করে দেওয়ার মতো। এঁরা প্রত্যেকেই শিক্ষক। এমনকী স্কুলের প্রধান শিক্ষক(Head Master)-শিক্ষিকারাও ছিলেন এই ভিড়ের মধ্যে। আর এমন ঘটনা ঘটেছে পঞ্জাবে (Punjab)। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) ভগবন্ত সিং মান শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সরকারি বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আর ওই বৈঠকের পরই খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। বৈঠক শেষ হতেই খাবার পেতে দৌড় লাগালেন অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা। এমনকী হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন তাঁরা।
আর এই ভিডিও সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যাঁদের হাতে পড়ুয়াদের শিক্ষার ভার, তাঁরাই খাবার খাওয়ার জন্য এমন অভব্য আচরণ কী করে করেন! সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে নিন্দার ঝড়। কেউ লিখছেন,''এই সমস্ত মানুষকে ছোটবেলায়(Child age) কেউ শিষ্টাচারের পাঠ দেয়নি। এঁদের কাছে শিশুরা পড়াশোনা করলে তারা ভদ্র সমাজের আদব কায়দা সম্পর্কে কিছুই জানতে পারবে না।'' আবার কেউ লিখেছেন, ''কতক্ষণ ধরে মিটিং চলছিল যে এভাবে প্লেট আর টিস্যু নেওয়ার জন্য কাড়াকাড়ি করতে হল।'' কেউ আবার মজাচ্ছলে লিখেছেন,''আহারে বেচারাদের বড্ড খিদে পেয়েছিল বোধহয়!''
সব মিলিয়ে এই ভিডিও সামনে আসতেই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে পঞ্জাবে শিক্ষা দফতরকে (Education Department)। যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা সাধারণ শিষ্টাচারটুকুও জানেন না, তাঁদের দিয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে কী করে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।