করোনার অজস্র ‘পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া’র মধ্যে একটি অবশ্যই অভ্যাসগত পরিবর্তন। দু'বছরের বেশি সময় সারা বিশ্বের দৈনন্দিন কাজের অভ্যাসকেও ভিন্নভাবে আয়ত্ত করেছে মানুষ। বাড়ি থেকেই চাকরি বা 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম'-এ স্বচ্ছন্দ্য মানুষ। আর সেই কারণেই করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ার পরও অনেকেই বাইরে বেরিয়ে কাজ করতে চাইছেন না। অফিসকেও ঘরের স্বাচ্ছ্যন্দেই বেঁধে রাখতে চাইছেন। অবস্থা এমন জায়গাতেও যাচ্ছে, যখন অফিস গিয়ে কাজ করার বদলে চাকরি ছেড়ে দিতেও পিছপা হচ্ছেন না চাকুরিজীবীরা।
'হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র' নামে এক বেসরকারি সংস্থা নিজের কর্মীদের অফিসে এসে কাজ করার জন্য ই-মেল পাঠায়। সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আর 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' করা যাবে না। গত ১৮ মার্চ ই-মেল পাঠিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়, কর্মীদের একমাসের মধ্যে মুম্বই, বেঙ্গালুরু এবং গুরুগ্রামের অফিসে যোগ দিতে হবে।
তবে কিছুতেই অফিসে আসতে রাজি ছিলেন না সংস্থার কর্মচারীরা। শুধুমাত্র অফিসে এসে কাজ করতে রাজি না হওয়ায় দু’মাসের ব্যবধানে এই সংস্থা থেকে ইস্তফা দিলেন ৮০০ জন কর্মী।
করোনা আবহের পর থেকে বেশিরভাগ সময়ই বাড়ি থেকে কাজ করছিলেন এই সংস্থার কর্মীরা। তবে বর্তমানে দেশে করোনা পরিস্থিতি আপাতত খারাপ থাকায় স্বাভাবিক হলে কর্মীদের অফিস এসে কাজ করার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই এই বিপত্তি। তবে শুধু 'হোয়াইটহ্যাট'-ই নয়, দিন কয়েক আগে একই যুক্তিতে ইস্তফা দিয়েছেন 'অ্যাপল'-এর মেশিন লার্নিংয়ের ডিরেক্টর ইয়ান গুডফেলো। অ্যাপলও তার কর্মীদের দফায় দফায় 'ওয়ার্ক ফ্রম হোমের' দিনসংখ্যা কমানোর নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু 'গুডফেলো' তাতে রাজি নন। তাতেই তিনিও চাকরি ছেড়েছেন। 'হোয়াইট হ্যাটের' কর্মীরা বেতন ইত্যাদি অন্যান্য অভিযোগ আনলেও গুডফেলোর ক্ষেত্রে কিন্তু তা প্রযোজ্য নয়। কারণ অ্যাপল-এর এই উচ্চপদাধিকারী ব্যক্তি বছরে ১০ লক্ষ মার্কিন ডলারের বেশি বেতন পেতেন।
২০২০ সালে 'হোয়াইটহ্যাট জুনিয়র' সংস্থার মালিকানা নেয় 'বাইজু' নামে বেসরকারি সংস্থা। এরপর পদ থেকে সরে যান 'হোয়াইটহ্যাট'-এর প্রতিষ্ঠাতা। যদিও সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে ‘অবিচার’ শুরু হয়েছে বলেও কর্মীদের একাংশের অভিযোগ। তবে সদ্য যাঁরা ইস্তফা দিয়েছেন, তাঁরা কারণ হিসাবে সেই অভিযোগ তোলেননি।