পার্থ-অর্পিতার রাশি রাশি টাকা ও সোনা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এরই মাঝে নতুন একটি ঘটনা শনিবার সন্ধ্যায় সবার নজর কাড়ে। তা হল, হাওড়ায় ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়ক প্রায় ৫০ লক্ষ নগদ টাকা সমেত ধরা পড়ে যান। এই টাকা কোথা থেকে তাঁরা এনেছিলেন, কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলেন, কেন নিয়ে যাচ্ছিলেন, এ সবই তদন্তের বিষয় বলে পুলিস জানিয়েছে।
কিন্তু কংগ্রেস যে এই কাণ্ডে যথেষ্ট বিব্রত, তা বোঝা গেল দলের সিদ্ধান্তে। রবিবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দেওয়া হল, এই তিনজনকে দল এখনই সাসপেন্ড করছে। পাশাপাশি দলের একটা অংশ থেকে বলার চেষ্টা করা হয়েছে, ঝাড়খণ্ডে সরকার ফেলতেই বিজেপি এই টাকার খেলা খেলেছে। অর্থাত্, বিজেপিই ওই জিনজনকে টাকা দিয়েছে। যদিও বিজেপি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এটা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা এবং কংগ্রেস সরকারের দুর্নীতিরই সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা ঝাড়খণ্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত অবিনাশ পাণ্ডে বলেন, কোনও জনপ্রতিনিধি বা অফিসকর্মী, যেই এই ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত হবেন, দল তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আর এই সিদ্ধান্ত যে খোদ নেত্রী সোনিয়া গান্ধিরই, তাও তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন।
অন্যদিকে, শনিবার রাতভর দফায় দফায় সিআইডি, ইনকাম ট্যাক্স এবং হাওড়া গ্রামীণ পুলিস জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কংগ্রেসের ওই তিন বিধায়ক ইরফান আনসারি, রাজেশ কচ্ছপ, নামান বিক্সলকে। তাঁদের গাড়ি থেকেই শনিবার উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা। সেই টাকা গোনার জন্যে মোট ৪টি মেশিন আনা হয়েছিল। রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত চলেছে টাকা গোনার কাজ। পুলিশের কাছে বিধায়করা জানিয়েছেন, বড়বাজার থেকে শাড়ি কিনতে এই টাকা নিয়ে আসা হয়েছিল। সেই শাড়ি আদিবাসী দিবস উপলক্ষে ঝাড়খণ্ডের গ্রামীণ অঞ্চলে বিলি করার কথা ছিল। তবে বড়বাজারের বদলে এদিন তাঁরা পূর্ব মেদিনীপুরের মন্দারমণির উদ্দেশে কেন যাচ্ছিলেন? সেই নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। এরপর তিন বিধায়ক-সহ ৫ জনকে আটক করা হয়। তবে বয়ানে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে বলে প্রায় সারারাত জিজ্ঞেসবাদ করা হয়, এমনটাই সূত্রের খবর।