উত্তর ভারতের সঙ্গে দক্ষিণ ভারতের খাওয়াদাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ, সংস্কৃতি একেবারেই আলাদা। উত্তর ভারতে রুটি-সবজি, কালাডাল, ভাজাভুজি ইত্যাদি খাওয়া হয়ে থাকে বেশি। তাঁরা ধোসা পর্যন্ত যা খেয়ে থাকে, তার সঙ্গেও দক্ষিণ ভারতের ধোসার কোনও মিল নেই। আমিষাশী উত্তর ভারতে যারা, তারা প্রচুর তেল-মশলা দিয়ে রান্না খেয়ে থাকে। দক্ষিণে ঠিক বিপরীত। বাঙালির খাবারের সঙ্গেও কোনও মিল নেই দক্ষিণ ভারতীয়দের।
আজকাল অবশ্য বেঙ্গালুরুতে মিক্সড কালচার এসে গিয়েছে। সেখানে যেমন হিন্দি চালু রয়েছে তেমনই শহরের যত্রতত্র উত্তর ভারতীয় খাবার পাওয়া যায়। কিন্তু ব্যাঙ্গালুরুর সঙ্গে চেন্নাইয়ের কোনও কোনও ক্ষেত্রে মিল থাকলেও তামিলরা আজও ভয়ঙ্কর গোড়া সংস্কৃতি বজায় রাখতে। এখন হায়দরাবাদ কিংবা ব্যাঙ্গালুরুতে সাদা লুঙ্গি পরা মানুষের দেখা পাওয়া যায় কম। কিন্তু চেন্নাইতে বা সব তামিলনাড়ুতে লুঙ্গি-সাদা শার্ট অবশ্য চলে। রাজনৈতিক নেতাদের শতকরা ৯০ শতাংশ এই সংস্কৃতি মেনে চলে এবং চলতেই থাকবে।
খাওয়াদাওয়া নিয়ে তারা তাদের পুরাতন ঐতিহ্য বজায় রেখেছে। রুটি পাউরুটির চল খুবই কম। সকালে জল-খাবারে উপমা বা বাড়িতে বানানো ইডলি খেয়ে থাকেন। উপমা এককথায় ঝাল সুজি, যার মধ্যে বাদাম সবজি কাঁচালঙ্কা এবং কারিপাতা থাকে। চালের গুঁড়ো দিয়ে ইডলি আসলে মেশিনে বানানো একদলা ভাত ছাড়া আর কিছুই নয়। নারকেলের চাটনি দিয়েই এই দুই জলখাবার তারা খেয়ে থাকে।
কখনও দোসা বানায় বাড়িতে কিন্তু সেই দোসা কুড়কুড়ে ক্রাঞ্চি নয় বরং পরোটার মতো নরম। তার স্বাদও কলকাতা বা দিল্লির মতো নয় একবারেই সাদামাঠা। ওই দোষে ভিতরে আলুর পুর থাকে না। সাদা ধোসা নারকেলের চাটনি সহযোগে খেয়ে থাকে সেখানকার মানুষ। দুপুরে মিক্সড ভেজিটেবল, যা প্রায় আলুহীন। বিন থেকে শুরু করে নানান সবজি তার সঙ্গে সম্বর ডাল, ভাত এবং কার্ড রাইস বা টক দইয়ের সাথে মাখা ভাত। এই কার্ড রাইসের খুব চল রয়েছে তামিলনাড়ুতে। যারা মাছ মাংস খায় তারাও কারিপাতা এবং রিফাইন্ড নারকেল তেল দিয়ে রান্না করেন। এই খেয়ে দিব্বি স্বাস্থ্যবান তাঁরা।