স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও পৌরসভা এলাকায় পানীয় জল বলতে খালের জল ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেই। কলকাতা কর্পোরেশন এলাকার ১৩৯, ১৪০ এবং ১৪১ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া মহেশতলা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আকরা ফটক, ধানক্ষেতি এলাকার এক নম্বর বস্তিতে আনুমানিক ৩ থেকে ৫ হাজার মানুষের বসবাস। আজ থেকে বহু বছর আগে রুজি-রুটির টানে উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড থেকে বহু মানুষ এই এলাকায় এসে বসবাস শুরু করে। উপার্জন বলতে রিকশ-ভ্যান এবং ইটভাটার শ্রমিকের কাজ করেই দিনযাপন হত তাদের। পরবর্তী সময় ইট, বালি নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে ড্রাইভার বা খালাসির কাজে যুক্ত হয় বেশ কিছু মানুষ। এখানকার মানুষের ভোটদানের অধিকার আছে, আছে আধার কার্ডও। এমনকি মহেশতলা পৌরসভাকে খাজনাও এরা দেয়। কিন্তু যেটা নেই তা হল পানীয় জলের ব্যবস্থা।
স্থানীয় মেটিয়াব্রুজ বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল খালেক মোল্লা তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর আগে একটি টিউবওয়েল করে দিলেও সেই জল খাওয়ার উপযোগী নয় বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। সামনেই পৌরসভা ভোট, এলাকাবাসীর দাবি প্রত্যেকবারের মতো এই ওয়ার্ডে ভোটে দাঁড়ানো প্রার্থীরা ফের আশ্বাস দিয়ে ভোট বৈতরণী পার করে চলে যাবেন। কিন্তু পানীয় জলের কোনও প্রকার সমাধান হবে না। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই গঙ্গার অপরিশোধিত জলে ফটকিরি মিশিয়ে সেই জলই খেতে হয় এদের।
স্বাভাবিকভাবেই অভিযোগ ওঠে, এই জল খাওয়ার জন্য শিশু এবং বয়স্কদের প্রায়শই পেটে এবং বুকে ব্যথা হওয়ার পাশাপাশি ডায়রিয়ার প্রকোপেও ভুগতে হয় তাদের। পাশাপাশি এত বছর ধরে এলাকায় বসতি গড়ে উঠলেও, কোনও প্রকার রাস্তা আজ পর্যন্ত তৈরি হয়নি। তাই বর্ষা আসলেই জলকাদার যন্ত্রণায়ও ভুগতে হয় এলাকাবাসীকে।
এই প্রসঙ্গে মহেশতলা পৌরসভার প্রশাসক তথা মহেশতলার তৃণমূল বিধায়ক দুলালচন্দ্র দাসকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, আকরা ফটক এলাকাতেই ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি জল প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। প্রকল্পটি চালু হলে এই জলের সমস্যা মহেশতলা এলাকায় আর থাকবে না। পাশাপাশি বিধায়ক আরও জানান, এই মুহূর্তে কলকাতা কর্পোরেশন থেকে যে পরিমাণ জল পাওয়া যাচ্ছে, তাতে নতুন করে কোনও জায়গায় জলের সংযোগ দেওয়া মহেশতলা পৌরসভার পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে একপ্রকার পরিশুদ্ধ পানীয জল পরিষেবা না পেয়ে সমস্যায় বাসিন্দারা।