কলকাতায় লোকসভার নিরিখে মাত্র দুটি কেন্দ্র, একটি উত্তর, অন্যটি দক্ষিণ | প্রশ্ন উঠতে পারে, দুর্গাপুরেও তো দুটি কেন্দ্র। তবে কিসে বড় শহর কলকাতা ? উত্তর, দুর্গাপুরে লোকসভায় অনেক অঞ্চল গ্রামে ঢুকে গিয়েছে। অন্যদিকে কলকাতার কিছু অংশ যাদবপুর, কিছু অংশ দমদম ও কিছু অংশ ডায়মন্ড হারবারের মধ্যে ঝুঁকে আছে, যে জায়গাগুলি কলকাতা পুরসভার মধ্যে পড়ছে | কলকাতা দুভাগে ভাগ হলেও কলকাতাবাসীর কাছে চালু একটি অঞ্চল রয়েছে 'মধ্য কলকাতা' |
উত্তরের কলেজ স্ট্রিট থেকে দক্ষিণের এক্সাইড মোড় অবধি | এই অঞ্চলে একদিকে যেমন বাঙালি আছে, তেমনই হিন্দিভাষী প্রচুর মানুষের ভিড়ও আছে | কলেজ স্ট্রিট মানে পড়াশুনার অঞ্চল | বইয়ের দোকান, কাপড়ের দোকান থেকে হিন্দু, হেয়ার স্কুল | প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে আরও অনেক কলেজ | বৌবাজার থেকে শুরু করে মহাত্মা গান্ধী রোড অবধি রাস্তা কিন্তু সর্বদা ব্যস্ত। সরু রাস্তা, পাশাপাশি দুটি বাস থাকলে মনে হয় একে অপরকে ধাক্কা দেবে | এর উপর সমস্ত ফুটপাথ ফেরিওয়ালাদের দখলে, মানুষের হাঁটার জায়গা নেই। ফলে পথচারীকে পথেই নামতে হয়। এই সমস্যার সমাধান বোধহয় নেই | বৌবাজার অঞ্চলটি অত্যন্ত ঘিঞ্জি | বহু পুরাতন বাড়ি আছে এখানে। যা যে কোনও দিন ভেঙে পড়তে পারে | পুরসভা থেকে নোটিশ দেওয়া হলেও ভাঙা হয়নি বাড়িগুলি | এরপর অফিসপাড়া অর্থাৎ বিবাদী বাগ | ডালহৌসি আছে ডালহৌসিতেই। কিন্তু হাওড়াগামী এনএস রোড সদা জ্যামে ব্যস্ত |
ধর্মতলা অঞ্চল কলকাতার প্রাণকেন্দ্র | পাঁচতারা হোটেল থেকে নিউ মার্কেট, বাস গুমটি থেকে বেশ কিছু পুরাতন অফিস রয়েছে এসপ্ল্যানেড বা ধর্মতলা অঞ্চলে | দুর্দান্ত সিনেমা হল বেশ কয়েকটি ছিল এখানে। কিন্তু আপাতত প্যারাডাইস ছাড়া বাকি সব বন্ধ, যা কোনও দিন খুলবে না।
সবশেষে পার্ক স্ট্রিট থেকে মিডলটন স্ট্রিট হয়ে এজেসি বোস রোড | এই অঞ্চলটিকে সাজিয়ে রেখে গিয়েছে ব্রিটিশরাই। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে আরও রূপসী হয়েছে | এক সময় হোটেল, রেস্টুরেন্ট থেকে সাহেবি অফিস এখানেই ছিল, আছেও | বিভিন্ন দেশের হাই কমিশনের অফিসও এখানে | আছে ভিক্টোরিয়া থেকে মনুমেন্ট, জাদুঘর থেকে তারাঘর | কলকাতার সেরা জায়গা কিন্তু এই মধ্য কলকাতাই |