কলকাতাকে লন্ডন বানানোর কথা আগেই বলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শুধু লন্ডন নয়, এবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বা ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকার সানফ্রান্সিসকোর মতো কলকাতা শহরেও ইলেকট্রিক ট্রলিবাস চালানোর চিন্তাভাবনা শুরু করছে পরিবহণ দফতর। উল্লেখ্য, ঐতিহ্যবাহী কলকাতা ট্রামে যাত্রীর পাশাপাশি কমেছে ট্রামের সংখ্যাও। ফলে রাজ্য পরিবহণ নিগম প্রতিমাসে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
লকডাউনের আগের দিনগুলিতে একটি ট্রামরুট থেকে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা আয় হত। বর্তমানে একটি রুটে প্রতিদিনের আয় এক হাজার থেকে ১২০০ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। আগে একটা ডিপো থেকে ২ লাখ টাকা মাসিক আয় হত। এখন সেটা মাত্র ৫০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর। নানা কারণে এই মুহূর্তে কলকাতা শহরে ঐতিহ্যবাহী ট্রাম চলাচল বিভিন্ন রুটে প্রায় বন্ধ।
তাই এবার রাজ্য পরিবহণ নিগমের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, এই স্তব্ধ হয়ে যাওয়া ট্রামরুটে যদি চালানো যায় আধুনিক ট্রলিবাস। ওভারহেড ইলেকট্রিকের মাধ্যমে যেভাবে ট্রাম চলে, ঠিক একইভাবে চলবে এই ইলেকট্রিক ট্রলিবাস। আর ট্রামলাইন ধরেই চলবে এই ট্রলিবাস। তবে এর আর একটা সুবিধা রয়েছে। ট্রলিবাস লাইন ছাড়াও চলাচল করতে পারবে। বিশেষ করে যখন ক্রসিংয়ে এই ট্রলিবাস আসবে, তখন তারা তাদের ট্রাক ছেড়ে যাতায়াতের জন্য ইলেকট্রিক লাইন ছেড়ে ব্যাটারির সাহায্যে সাধারণ রাস্তায়ও চলতে পারবে। আর যখন ইলেকট্রিক লাইনে চলবে, তখন এই আধুনিক বাস নিজেই ব্যাটারি চার্জ করতে পারবে।
তবে এখন এই পরিকল্পনা শুধুমাত্র প্রাথমিকস্তরে রয়েছে। যার ফলে পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ সমীক্ষা শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যেহেতু শহরের বিভিন্ন জায়গায় ট্রামের একটা নেটওয়ার্ক রয়েছে, তাই আলাদা করে ট্রলিবাসের জন্য ট্রাক তৈরি করার প্রয়োজন হবে না। এছাড়া ট্রলিবাস কোথাও থেকে নেওয়া হবে, নাকি কলকাতার যেখানে পুরনো ট্রামগুলিকে আধুনিক করা হচ্ছে, সেখানেই এই আধুনিক ট্রলিবাস তৈরি করা যায়, এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে পরিবহণ নিগমে।