সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণার ছক। গ্রেফতার দুই মহিলা সহ ৫ বিদেশি নাগরিক। দিল্লিতে হানা দিয়ে ৭ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বড়সড় সাফল্য পেল বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস।
অভিযুক্তদের নাম অনিতা, মণিপুরের বাসিন্দা। থৈমাওজাম শেইতাবালা দেব। অন্যেকপোয়ান্নে লেকভিন। কেনেথ জিম, দক্ষিণ আফ্রিকার বাসিন্দা। নেলসন, ক্যামেরুনের বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ রাজারহাট কলিপার্কের বাসিন্দা শালিনী রায় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় একটি অভিযোগ জানান। যেখানে তিনি বলেন, এবছরের শুরুর দিকে তাঁর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া মারফত থেরেসা দেব অঙ্গি নামের এক মহিলার পরিচয় হয়। পার্সোনাল চ্যাট করার সময় ওই মহিলা তাঁকে ভারতীয় শাড়ির কিছু নমুনার ছবি পাঠাতে বলেন। তিনি সেই সমস্ত ছবি পাঠানোর পর ওই মহিলা শালিনীদেবীকে জানান, তিনি প্রচুর পরিমাণ ভারতীয় শাড়ি কিনতে চান। এপ্রিল মাসে অভিযুক্ত মহিলা শালিনীদেবীকে জানান, তাঁর জন্য তিনি একটি উপহার পাঠাচ্ছেন। সেই উপহারের ছবিও পাঠান এবং ট্র্যাকিং আইডি পর্যন্ত পাঠান বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি জন্য।
২২ শে এপ্রিল মহিলার কাছে আরও একটি ফোন আসে, যেখানে অনিতা নামের একজন নিজেকে কাস্টম হাউস এজেন্ট পরিচয় দেয় এবং জানায়, উপহারের কাস্টম ক্লিয়ারেন্স করার জন্য ২৭ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হবে। সেই মোতাবেক অভিযোগকারিণী একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা পাঠান। তাঁকে একটি মেইল মারফত (lyoncourier@gmail.com) রিসিটও পাঠানো হয়।
তবে পরবর্তীতে আবারও তাঁকে ফোন করে কাস্টম ক্লিয়ারেন্সের নাম করে টাকা চায় প্রতারকরা। এরপরই বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হন তিনি।
ঘটনার তদন্ত শুরু করে এই ধরনের প্রচুর প্রতারিতের খোঁজ পায় বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস। পুলিস সূত্রে জানানো হয়, এই চক্র কলকাতায় ছোট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের টার্গেট করে এই অপকর্ম চালাত। অবশেষে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের আইপি ট্র্যাক করে দিল্লিতে হানা দেয় বিধাননগর সাইবার পুলিসের একটি দল। সেখান থেকেই দুজন মহিলা সহ ৫ জন বিদেশিকে গ্রেফতার করে পুলিস।
অভিযুক্তদের দিল্লি আদালত থেকে ৫ দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে আসা হয়। শনিবার অভিযুক্তদের বিধাননগর আদালতে তোলা হবে। তাদের সঙ্গে আর কারা যুক্ত রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিস।