করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে বিপন্ন হতে চলেছে চিকিৎসা ব্য়বস্থা। করোনার জেরে নাজেহাল গোটা রাজ্য়। করোনা মোকাবিলায় যাঁরা সামনের সারির যোদ্ধা তাঁরাও আক্রান্ত হচ্ছেন একের পর এক। লাগামহীন সংক্রমণ বৃদ্ধিতে চিকিৎসক মহলও বাদ নেই। আর তাতেই বাড়ছে দুশ্চিন্তা।
শহর কলকাতার বেশ কয়েকটি হাসপাতালেই পড়েছে করোনার থাবা। মেডিক্যাল কলেজে ইতিমধ্য়েই স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৩০০ । সূত্রের খবর, এঁরা বেশিরভাগই স্নাতকোত্তরের চিকিৎসক। বাকিরা আছেন ইন্টার্ন এবং বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সকলের উপসর্গই জ্বর। মৃদু উপসর্গ নিয়ে আপাতত বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন এঁরা। এঁরা প্রত্যেকেই ভ্যাকসিনের দু'টি ডোজ নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে সার্জারি বিভাগ ছাড়াও একাধিক বিভাগের চিকিৎসা বিলম্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬। এঁদের মধ্যে চর্ম বিভাগের ৬ জন আক্রান্ত। যদিও এঁরাও প্রত্যেকেই দুটি করে ডোজ নিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। আর এই ৬ জনই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
এবার একশোর গণ্ডি পার করল করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাগর দত্ত মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালে। এঁদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে সার্জারি বিভাগের আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। ১৫ জন নার্সিং স্টাফও আক্রান্ত। স্নাতকোত্তরের চিকিৎসক আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৭৫ জন। বাকিরা জুনিয়র চিকিত্সক।
চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে আক্রান্তের সংখ্য়া বেড়ে ২০০ । বৃহস্পতিবার সেখানে ১৮০ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। এদিন এক ধাক্কায় ২০জন নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এঁদের মধ্যে ৬ জন সিনিয়র চিকিত্সক। বাকি ১৪ জন এর মধ্যে রয়েছেন ৭ জন স্নাতকোত্তর চিকিৎসক। বাকিরা ইন্টার্ন। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা চিকিত্সা পরিষেবা বিঘ্নিত হতে দেবেন না।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত হাসপাতালগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা এমনই। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগী ও তার পরিজনরা। এই অভিযোগই করছেন তারা। এরকম চলতে থাকলে চিকিত্সা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় ওয়াকিবহাল মহল। তাই সবার আগে প্রয়োজন করোনা বিধি মেনে চলা। তবেই করোনা মুক্ত হবে এ রাজ্য়।