প্রসূন গুপ্ত, কলকাতা:
সব্যসাচী আগেই জানতেন, জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা এবং তাই হল। বিধাননগর প্রাক্তন মেয়রকে ঢেলে ভোট দিল। বিধাননগর পুরসভা এর আগে এরকম ফল দেখেছে কি সন্দেহের। এবারের বিষয়টি কিন্তু আলাদা। নিউটউন, রাজারহাট, কেষ্টপুর, বাগুইআটি থেকে বিমানবন্দরের প্রায় কাছাকাছি অবধি একটি অঞ্চল, অন্যটি একেবারেই সল্টলেক। এই মূল বিধানগর কিংবা সল্টলেকে কারা থাকেন? অবশ্যই জ্যোতিবাবুদের আমলে বাম ঘনিষ্ঠ মানুষরাই জমি পেয়ে বাড়ি গড়েছেন এখানে। এঁদের কলকাতা বুদ্ধিজীবী হিসাবেই চেনে। এক সময় দক্ষিণ দমদমে সিপিএম পিছিয়ে গেলেও সল্টলেক তাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সেই সল্টলেকও পাল্টে গেরুয়ার দিকে গিয়েছিল এক সময়। এবার কিন্তু ইকুয়েশন পাল্টে গেল নির্মমভাবে।
একদিন শোভন-বৈশাখীর প্রেম দেখে সব্যসাচী জানিয়েছিলেন, আমার একেই সন্তুষ্টি অর্থাৎ স্ত্রী ইন্দ্রানী। রাজনীতিতে স্বামীর পাশে সর্বক্ষণ না থাকলেও বাকি সব্যসাচীর নানান কাজে অনেকটাই সময় দেন। ইন্দ্রানী মূলত সংসারধর্ম পালন করা ছাড়াও সামাজিক কাজে যুক্ত থাকেন। এছাড়া পুজো তো আছেই। একটি দুর্গাপুজো এবং তার সঙ্গে থাকা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ইন্দ্রানী নিজের কাঁধে অনেকটাই দায়িত্ব নেন। সব্যসাচীরা পূর্ববঙ্গের মানুষ। ফলে বেশ অনুষ্ঠান করে তাঁর বাড়িতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হয়ে থাকে। আলাদা আমন্ত্রিত কেউ থাকে না। যে আসবে প্রসাদ গ্রহণ করতে পারবে, এটাই তাঁদের কর্তাগিন্নির দস্তুর। তবে রাজনীতিতে সারাটা দিন কাটিয়ে দেওয়ার ফলে ইন্দ্রাণীকে নিয়ে কোনও সিনেমা বা কোথাও খেতে যাওয়ার সময় পান না সব্যসাচী। কখনও হয়তো কদিনের জন্য কোথাও ঘুরে আসা, ব্যাস। আসলে কর্তাগিন্নি জানেন, রোমান্টিকতা লোক দেখিয়ে হয় না, ওটা মনের ব্যাপার।
সোমবার ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে বিশাল জয় সব্যসাচীর। চলে গেলেন দিদি মমতার বাড়ি। আশীর্বাদ করে মমতার প্রশ্ন ইন্দ্রাণীকে, কী দিল আজকের দিনে সব্য? উত্তর ইন্দ্রানীর, কিছু না। কিন্তু তা বললে কী হয়, দিদির দেওয়া একটি শাড়ি পেয়ে গেলেন সব্যসাচী জায়া| এরপর সব্যসাচী কী দেন, সেটাই দেখার।