শেষ হল "দাদার কীর্তি"র শ্রষ্টার লড়াই। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতের বিশিষ্ট কিংবদন্তী চলচ্চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদার। গত ১৪ জুন থেকে কিডনি ও ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অবশেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বর্ষীয়ান পরিচালক। আজ সকাল ১১.১৭ নাগাদ প্রয়াত হন তিনি। তরুণ মজুমদারের মৃত্যুতে শোকাহত গোটা টলি-পাড়া।
কোনও ফুলের মালা দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন নয়। হয়নি কোনও শোক মিছিলও। কেবল চোখের জলেই বিদায় নিলেন বর্ষীয়ান পরিচালক। শেষবারের মতো আজ তাঁকে এনটিওয়ান স্টুডিওতে নিয়ে যাওয়া হয়। অনুরাগীরদের শেষশ্রদ্ধা জানানোর আগেই এনটিওয়ান থেকে পরিচালক তরুণ মজুমদারের শবদেহ নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। এদিন শবদেহ গাড়ি থেকে নামানোই হয়নি। শ্রদ্ধা জানাতে আসেন অভিনেতা, কলাকুশলী থেকে একাধিক চিত্রপরিচালক। লাল পতাকায় মুড়িয়ে দেওয়া হয় কিংবদন্তী পরিচালককে। তাঁর বুকের উপর রাখা হয় গীতাঞ্জলি। পরিচালক দেহদান করে গিয়েছেন। ফলে তাঁর শেষকৃত্য হচ্ছে না।
তাঁর মৃত্যুতে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সন্ধ্যা রায়, দেবশ্রী রায়। শোকবার্তা আসে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের থেকেও। দুঃখপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এদিন এনটি ওয়ান স্টুডিওতে এসে পৌঁছন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রনীল সেন, শংকর চক্রবর্তী, সুদীপ মুখোপাধ্যায়, কৌশিক রায়, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দন সেন, দোলন রায় সহ একাধিক ব্যক্তিত্ব।
এদিন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নক্ষত্র পতন তো বটেই। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও তাঁর সঙ্গে বেশ অনেকবার দেখাসাক্ষাত্ হয়েছিল তাঁর।
দোলন রায় জানান, "আমার এই স্টুডিওতে দাঁড়ানো তরুনবাবুর জন্য। আমি নাটক করতাম। আমার নাটক দেখতে এসেই আমার সঙ্গে পরিচয় এবং সেখান থেকেই পথ চলা শুরু।"
সুদীপ মুখোপাধ্যায় জানান, " ওনার সঙ্গে আমার আলাপ বহুদিনের। সুযোগ পেয়েছিলাম ওনার সঙ্গে কাজ করার। অত্যন্ত স্নেহ পেয়েছিলাম ওনার কাছে। আমি বুঝতে পারতাম আমার শট-এ উনি খুব খুশি হতেন। খুব দুঃখজনক ঘটনা।"
ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় জানান, "উনি খুব ডিসিপ্লিন ও স্ট্রিক্ট একজন মানুষ। ওনাকে দেখে মনে হত উনি খুব গম্ভীর। কিন্তু সেটের বাইরে উনি খুব মজা করতেন। এছাড়াও যাঁরা ওনাকে খুব ভালো করে চেনেন, তাঁরা জানেন, তিনি খুব ভালো একজন অভিনেতাও ছিলেন।"