Share this link via
Or copy link
স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির (SSC) নবম-দ্বাদশ শিক্ষক নিয়োগ এবং গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি নিয়োগে বেনজির দুর্নীতি। কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ফরেন্সিক রিপোর্ট দাখিল করে দাবি সিবিআইয়ের (CBI)। কেন্দ্রীয় সংস্থার অভিযোগ, 'অনেক প্রশ্নের উত্তর না দিয়েও নম্বর পেয়েছেন। একাদশ-দ্বাদশ নিয়োগে ৯০৭ জনের নম্বরে হেরফের ঘটানো হয়েছে। একইভাবে গ্রুপ-সি-র নিয়োগে ৩৪৮১ জন, গ্রুপ ডি নিয়োগে ২৮২৩ জনের নম্বরের হেরফের ঘটেছে আর নবম-দশম নিয়োগে ৯৫২ জনের নম্বরে হেরফের ঘটানো হয়েছে।' এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে চারটি ফরেন্সিক রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা করেছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছেন সাদা ওএমআর শিট জমা করেও অনেকে নম্বর পেয়েছেন। আমাদের কাছে যা প্রমাণ আছে, তাতে নিয়োগ-কাণ্ডে জেলবন্দি কারও জামিন পাওয়া সম্ভব নয়। আমরা ৩টে হার্ড ডিস্ক পেয়েছি। সেখান থেকে এই তথ্য উদ্ধার হয়েছে।
সিবিআইয়ের এই অভিযোগের পর বিচারপতি বলেন, 'যারা বেআইনি ভাবে নিয়োগ পেয়েছেন, আশা করবো তাঁরা ইস্তফা দেবেন। যে চোর, সে খুব ভালো মতো যানে, সে চোর। যারা বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছে, তারা জানে কীভাবে তাঁরা চাকরি পেয়েছে। তারা নিজেরা পদত্যাগ না করলে, কোর্ট যথাযথ ব্যবস্থা করবে। আগামী দিনে তারা যাতে আর কোন সরকারি চাকরি না পায় সেই ব্যবস্থা করা হবে।' বিচারপতির প্রশ্ন, 'ইডি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেরা করছে। কিন্তু কল্যাণময়, এসপি সিনহা এঁদের কী হবে?' বিচারপতি বলেন, 'আমি সিবিআইয়ের আইনজীবীর মারফৎ সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে বলতে চাই, উনি কার ইন্সট্রাকশন এই কাজ করেছেন জানান।'
আমি সুবীরেশ ভট্টাচার্যকে বহু আগে থেকে চিনি। উনি প্রায় বলতেন আমি একা জেলে থাকবো, বাকিরা বেলে থাকবে এটা হতে পারে না। ববিতা সরকার ও অনিন্দিতা বেরার রিপোর্ট আমি খুলে দেখেছি। বাকি দুটো এখনো খুলিনি। যা দেখলাম প্রচুর ওএমআর শিট ব্ল্যাঙ্ক। আবার কিছুতে শুধু ৫-৬ টা জায়গা গোল করে মার্ক করা, আবার কিছুতে ১-২ টো জায়গা মার্ক করা। সাবিনা ইয়াসমিন মামলাতেও ব্ল্যাঙ্ক ওএমআর শিট উঠে এসেছে। যা সিবিআই, ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের হার্ডডিস্ক থেকে উদ্ধার করেছে। এই মন্তব্যও এদিন করেছেন বিচারপতি।
এই মন্তব্যের পর কোর্টের নির্দেশ, যাবতীয় নামের তালিকা এসএসসিকে দিতে হবে। তারা খতিয়ে দেখবে এই নিয়োগগুলো সঠিক কিনা। এসএসসি ও বোর্ড অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে বৈঠক করে মিলিয়ে দেখবে এদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কিনা। দিল্লি ও গাজিয়াবাদ থেকে তিনটে মাদার হার্ড ডিস্ক, ওএমআর শিট উদ্ধার হয়েছে, সেখানে সব নিয়োগের যাবতীয় নথি ছিল।
পাশাপাশি কোর্ট জানায়, এবার এসএসসি এই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে জানাবে আসলে কত জনের ক্ষেত্রে জালিয়াতি করে চাকরি দেওয়া হয়েছে। মাদার ডিস্কের সঙ্গে এসএসসি ডিস্ক মেলানো হয়। সব রিপোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেলের হেফাজতে রাখা থাকবে। প্রয়োজনে একাধিক বৈঠক করতে হবে। যারা বেআইনি চাকরি পেয়েছেন, তারা নিজেরা জানেন, পয়সা দিয়ে পেয়েছেন। তাঁরা নিজেরা এগিয়ে এসে চাকরি ছাড়ুন। ৯ নভেম্বরের মধ্যে চাকরি ছাড়তে হবে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ হবে না। কিন্তু তাঁরা স্বেচ্ছায় চাকরি না ছাড়লে, বেআইনি নিয়োগ প্রমাণ হলে ৭ নভেম্বরের পরে কোর্ট পদক্ষেপ করবে।