ভবানীপুরের ফ্ল্যাটে দম্পতি খুনের ঘটনায় রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত অধরা দুষ্কৃতীরা। সূত্রের খবর, সিসিটিভিতে স্পষ্ট, দুজন ব্যক্তি ছাতা মাথায় দিয়ে ওই বাড়ির গলি থেকে বেরোয় দুপুর ১.৩০ থেকে ১.৪০-এর মধ্যে। একে অপরের থেকে ১০-১৫ মিটার দূরত্বে হাঁটছিল। দুজন এমনভাবে ছাতা ধরেছিল, যাতে কোনওভাবেই তাদের মুখ দেখতে পাওয়া না যায়। কেউ যাতে চিনতে না পারে। তবে ডাকাতির উদ্দেশে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। মূলত লুটপাট করা ছিল উদ্দেশ্য। তাতে বাধা দেওয়ায় খুন, এখনও পর্যন্ত এমনটাই অনুমান করছে পুলিস।
অন্যদিকে, এই বহুতলের বিভিন্ন অংশে মোট 8 টি সিসিটিভি আছে। সবকটিই সচল। ছাদের সিসিটিভি থেকে যে বাড়িতে জোড়া খুন হয়েছে, সেই বাড়ির গলি দেখা যায়। এই সিসিটিভি ফুটেজকে ভরসা করে এগোতে চাইছে তদন্তকারীরা। পাশাপাশি ২বি সূর্যকুমার চ্যাটার্জি ঠিকানার ৪ তলা বাড়ির সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এটি একজন চিকিৎসকের বাড়ি। এই ফুটেজ তদন্তে সাহায্য করবে বলে পুলিসের ধারণা। এই বাড়ির পিছনের গলির সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়ির পাশেই যে প্রাইভেট তিনটি ক্যামেরা আছে, সেখান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করতে যায় পুলিস। কিন্তু গত দু'বছর ধরে সেই ক্যামেরা খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। এর জেরে তদন্তে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে পুলিসকে।
সিসিটিভি ফুটেজে ২ জনের ছবি দেখা গেলেও তারাই আসল খুনি, নাকি অন্য কেউ খুন করে পালিয়েছে, তা নিয়ে এখনও ধন্দে তদন্তকারীরা। পুলিস সূত্রে খবর, দম্পতির ২ টি মোবাইল ফোন পাওয়া যাচ্ছে না। তার খোঁজও চলছে। পুলিস জানিয়েছে, দুটি মোবাইল মিসিং আছে। তার মধ্যে একটি মোবাইল ফোন অফ আছে। আর একটি অন আছে। মিসিং মোবাইলগুলির টাওয়ার লোকেশন ডালহৌসি।
এদিন ভবানীপুর থানায় আসে মৃত দম্পতির পরিবার। এর আগে থানায় এসেছিলেন এসিপি প্রবীণ ত্রিপাঠি, জয়েন্ট সিপি অখিলেশ চতুর্বেদী, অ্যাডিশনাল জয়েন্ট সিপি ক্রাইমের দায়িত্বে থাকা ভি সলোমন নিশাকুমার। পুলিস সূত্রে জানা গেছে, মোটা অঙ্কের টাকা সামনে ম্যাচিওর হওয়ার কথা ছিল মৃত অশোক শাহের। অনেকের থেকে টাকা পেতেন তিনি। এই টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন অশোক শাহ।
পরিবারের দাবি, সোনার চেন সহ বেশ কিছু গয়না খোয়া গিয়েছে। আনুমানিক ৩০ হাজার টাকা ছিল। তাও খোয়া গিয়েছে। এই ঘটনায় মৃতার চুলের পাশ থেকে গুলির খোল পাওয়া গিয়েছে। এই দুই সন্দেহভাজনের পাশাপাশি পুলিশের স্ক্যানারে বাড়ির পরিচারিকা, ঠিকাদাররাও। মঙ্গলবার সকালে তাঁদের জেরা করেছে ভবানীপুর থানার পুলিস। ঘটনার সময় তাঁরা কে কোথায় ছিলেন, তা জানতে চান তদন্তকারীরা।