২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Bail: 'বাবা নেই, বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে থাকতে হবে', কোর্টে কেঁদে বলেন অর্পিতা, খারিজ জামিনের আবেদন
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-09-14 20:33:18   Share:   

১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে বুধবার ভার্চুয়ালি পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে (Partha Arpita) আদালতে তোলা হয়। এদিনও জামিনের আবেদন খারিজ করে দু'জনকেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতে (Jail Custody) পাঠান ইডি-সিবিআই (ED Court) আদালতের বিচারক। যদিও এই প্রথমবার কোর্টে জামিনের সওয়াল করেন ইডির হাতে গ্রেফতার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। রীতিমতো কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, 'স্যার আমার বাড়িতে ইডি প্রায় ৩০ ঘন্টা ছিলেন। আমি জানি না কীভাবে তারা নগদ পেলেন। আমি বাথরুমে ছিলাম ৪ ঘন্টা, তারপর বেডরুমে ছিলাম। আমি জানি না কীভাবে এত নগদ উদ্ধার হল। আমার বাবা নেই, বৃদ্ধা মা আছেন। তাঁকে দেখানো জন্য আমার দরকার।'

এই সওয়ালের পরেই অর্পিতাকে বিচারকের প্রশ্ন, 'টাকা কোথা থেকে পাওয়া গেল? আপনি কি মায়ের সঙ্গে থাকেন? ফ্ল্যাট কার নামে? আপনি টাকার বিষয়ে কিছু জানেন?'

জবাবে অর্পিতা জানান, ফ্ল্যাট আমার নামে। সেখান থেকেই টাকা উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু এই নগদের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার এন্টারটেইনমেন্টের ব্যবসা আছে। সংস্থার নাম ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্ট। কিন্তু নগদ উদ্ধার নিয়ে আমি অবগত নই। আমার কাছে এটাই আশ্চর্যের যে আমার বাড়ি থেকে এতো নগদ কীভাবে উদ্ধার হল!

একইভাবে 'আমি অসুস্থ, আমাকে শান্তিতে বাঁচতে দিন, জামিন দিন', কাঁদতে কাঁদতে এই আবেদন করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তবে কান্নাকাটি বৃথা, ফের ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে এই দুই অভিযুক্ত। এদিন অবশ্য শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাঁদতে কাঁদতে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিচারকের কাছে বলেন, 'আমার চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। আমাকে জামিন দিন, বাঁচতে দিন। ইডি ৩০ ঘন্টা ছিল আমার বিরুদ্ধে কিছুই সংগ্রহ করতে পারেনি। আমি জানতে চাই কে এটা করেছে? ইডি আমার বাড়িতে আসুন। আমার বিধানসভা কেন্দ্রে আসুন। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আমার মেয়ে আমেরিকায় থাকেন। আমাকে নিয়ে খুব চিন্তিত। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন।'

ভিডিও কলে হওয়া শুনানিতে পার্থর সওয়াল, 'আমি বৃদ্ধ মানুষ, একজন জনপ্রতিনিধি। অর্থনীতিতে স্নাতক। বহুদিনের রাজনীতিবিদ। আমার শারীরিক সমস্যা সংক্রান্ত ইএসআই জোকার রিপোর্ট জমা আছে দেখে নিতে পারেন।'

দুই অভিযুক্তের এই সওয়াল পালা শেষে ইডির যুক্তি, 'নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ড ১০০ কোটি টাকার। আরও বাড়তে পারে টাকার অঙ্ক। রাসবিহারী কানেক্টর এবং যামিনী রায় রোডে সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। অর্পিতার অ্যাকাউন্টে আরও ৫ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। যত তদন্ত এগোবে, এই টাকার অঙ্কের পরিমাণ আরও বাড়বে।'

ইডি আইনজীবী আদালতকে জানান, 'আমরা যেদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিলাম উনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। উনি দলের সেকন্ড ইন কমান্ড। আমরা যে সিজার লিস্ট অনেক দিয়েছিলাম, ওটা উনি ছিঁড়ে ফেলেছিলেন। তারপর এসএসকেএম-এ ভর্তি হয়েছিলেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অধীনে আরও তিনটি কোম্পানি পাওয়া গিয়েছে। পিংলায় একটি স্কুলের খোঁজও পাওয়া গিয়েছে।' দুই তরফের এই সওয়াল-জবাবের পর এদিন প্রায় ঘণ্টা চারেক রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। অবশেষে সন্ধ্যা ৭টার পর জামিনের আবেদন খারিজ করে ফের দু'জনকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।


Follow us on :