Share this link via
Or copy link
বুধবার চাকরি (SSC Case) চেয়ে এক্সাইড মোড়ে জমায়েত হওয়া চাকরিপ্রার্থীদের (Job Aspirants) গ্রেফতার করে আদালতে তোলে পুলিস (Kolkata Police)। পুলিসের কামড় (Police Bite) খাওয়া অরুণিমা পাল-সহ মোট ৩০ জন চাকরিপ্রার্থীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়। এই ৩০ জনকেই এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলেও জামিন পান (Bail Plea) প্রত্যেকেই। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পুলিস এঁদের 'অপরাধী' দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ২২ নভেম্বর পর্যন্ত এঁদের পুলিসি হেফাজতের আবেদন করে পুলিস। কিন্তু সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি। ধৃত ৩০ জনের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।
এদিকে, চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষের উকিল এদিন আদালতে সওয়াল করেন, 'কাদের আসামি বলে সম্মোধন করা হচ্ছে, চাকরিপ্রার্থীদের? আসামি তো তাঁরা, যারা চাকরি দিয়েছেন কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে। অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে যারা টাকা নিয়েছেন সেই মন্ত্রী, আসামিরাই আমাদেরই বিচারকক্ষে আসেন।' চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল, 'যাদের কোর্টে আনা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই শিক্ষক। প্রত্যেকেই টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। হাইকোর্টের নির্দেশ হলেও এঁদের চাকরি দিতেই পারছে না। উলটে একজন পুলিস কামড়েছে, এই কাজ মানুষের না। এঁরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিল, পুলিস বলপূর্বক এঁদের অত্যাচার করছে।'
চাকরিপ্রার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিস যে যে অভিযোগ এনেছে, তার প্রেক্ষিতে পর্যাপ্ত নথি পুলিস দেখাতে পারেনি। কৃষক আন্দোলনের সময় সুপ্রিম কোর্ট কৃষকদের সরায়নি। কিন্তু আমাদের চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে মাথা ফেটেছে, কারও হাড় সরেছে। এঁরা অত্যন্ত নিরীহ মানুষ, নিজেদের যোগ্যতায় শিক্ষক হয়েছে। যদিও পুলিস বলছে এঁদের সংগঠন খুঁজে বের করতে হবে। এঁরা কি মাওবাদী? এই প্রশ্নই আদালতে তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী।
তাঁদের সওয়াল, 'যে কামড়ালো সে পিজিতে ভর্তি আর যে কামড় খেলো সে হাজতে। পুলিস শাসক দলের দলদাসে পরিণত হয়েছে। ধৃত চাকরিপ্রার্থীদের নিঃশর্ত জামিন দেওয়া হোক। নয়তো সমাজের কাছে ভুল বার্তা যাবে।'
যদিও পুলিসের তরফে আইনজীবীর পাল্টা যুক্তি, 'চাকরিপ্রার্থীদের প্রতি আমরাও সমব্যথী। কিন্তু তাঁর মানে এই নয় যে ওরা আইন হাতে তুলে নেবেন। উন্মত্ত জনতাকে প্রতিহত করতে পুলিসকে তাঁর দায়িত্ব পালন করতে হবে। এঁরা শিক্ষক, শিক্ষক সুলভ আচরণ এঁদের থেকে কাম্য।' দু'পক্ষের এই সওয়াল-জবাবের পরেই কিছুক্ষণ রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। অবশেষে সন্ধ্যার পর ধৃত ৩০ চাকরিপ্রার্থীকেই জামিন দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত।
আদালতের এই রায়ে স্পষ্টতই নৈতিক জয় দেখছেন চাকরিপ্রার্থীরা। নিয়োগ নিশ্চিত না হলে আগামি দিনে আন্দোলন আরও জোরদার হবে, এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। এদিন জামিন নিশ্চিত হতেই কোর্ট ক্যাম্পাসে উদযাপন শুরু করেন চাকরিপ্রার্থীরা। অন্য চাকরিপ্রার্থীরা পুষ্পবৃষ্টির মাধ্যমে বরণ করে নেওয়া হয়।