যত দিন গড়াচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় (Srilanka Crisis) সরকার-বিরোধী আন্দোলন তত বেশি সংঘবদ্ধ হচ্ছে। আর্থিক সঙ্কটে থাকা এই রাষ্ট্রের প্রশাসনের বিরুদ্ধে এযাবৎকাল বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এবার দেশের বিরোধী দল পথে নেমে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে শনিবার থেকে দ্বীপরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ সোশ্যাল মাধ্যম (Ban on Social Media)। ফেসবুক, ট্যুইটার, ইউটিউব-সহ কোনও সোশ্যাল মিডিয়া আপাতভাবে সে দেশে ব্যবহার নিষিদ্ধ।
রবিবার জাতির উদ্দেশে জানান টেলিকম রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জয়ন্ত ডি সিল্ভা। এদিকে, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর কার্ফু চলবে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। এদিন প্রায় ১২ জন বিরোধী সাংসদ কার্ফু লঙ্ঘন করে পথে নেমেছিলেন। পরে বিরোধী দলের প্রায় ১০০ জন কর্মী-সমর্থক সেই প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলান। সেই মিছিল বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমদাসার বাড়ির সামনেই আটকায় পুলিস।
এদিকে, যত দিন যাচ্ছে, আর্থিক সঙ্কট ততই গভীর হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। জ্বালানির ভাঁড়ার শূন্য থাকায় ক্রমেই কঙ্কালসার দশা গণ-পরিবহণের। এই অবস্থায় ৪০ হাজার টনের ডিজেল-সহ ভারতীয় জাহাজ পাঠানো হয়েছে কলম্বোয় (Colombo)। ১ বিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্যের এই জ্বালানি দ্বীপরাষ্ট্রকে রফতানি করেছে দিল্লি। এমনটাই বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর। রবিবারের মধ্যেই গোটা শ্রীলঙ্কার মধ্যে সরবরাহ করা হবে জ্বালানি।
প্রায় আড়াই কোটির এই দেশে বিপুল বিদেশি মুদ্রার সঙ্কট। ফলে আমদানি ব্যবসা ক্রমেই তলানিতে শ্রীলঙ্কার। পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের দাবি, ক্রমেই কঙ্কালসার দশা গণ পরিবহণের। এই অবস্থা আরও দিন কয়েক চললে পুরো বসে যাবে গণপরিবহণ। অপরদিকে, বুধবার থেকে সে দেশে প্রেসিডেন্টের বিরোধিতায় পথে নেমেছিলেন সাধারণ মানুষ। এবার তাই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সেনার হাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ভার ছেড়েছেন জি রাজাপক্ষ।
প্রতিবাদ-বিক্ষোভ মাত্রাছাড়া হলে সেনাবাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে সে দেশের সরকার। কোনওরকম বিচার ছাড়াই জেল এবং জরিমানার নিদান রয়েছে সেই ক্ষমতায়। ইতিমধ্যে গল, মাতারা এবং মোরাটুয়া সরকার-বিরোধী প্রতিবাদ দেখেছে। পাশাপাশি উত্তর এবং মধ্য শ্রীলঙ্কায় ধীরে ধীরে ছড়িয়েছে সেই আন্দোলন।