একাই পদ্মা সেতু গড়ল বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সর্ববৃহত সেতু। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। সেতুটি দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমের ১৯টি জেলাকে সরাসরি যুক্ত করবে। আগামী ২৫ জুন সেতুটির উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর যানবাহন চলাচল আরম্ভ হবে। সেতু নির্মাণের ফলে সারা দেশের আঞ্চলিক যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যে এক সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিদেশি সাহায্যে সেতু নির্মাণের দাবি উঠেছিল বিভিন্ন মহলে। কিন্তু সেতু নির্মাণে চিনের সাহায্য নেওয়া হয়নি। এমনকি, কোনও বিদেশি তহবিলের সাহায্যও নেওয়া হয়নি। স্বপ্নের পদ্মা সেতু তৈরি করেছে একা বাংলাদেশ। সাফ জানিয়ে দিল হাসিনা সরকার।
সূত্রের খবর, সেতুটি পুরোদমে চালু হলে রেলপথে কলকাতা থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগবে মাত্র ছয় থেকে সাড়ে ছয় ঘণ্টা। ৪০টি স্তম্ভ থাকছে এই সেতুতে। প্রত্যেকটি স্তম্ভই তৈরি হয়েছে মজবুত পাইল ইস্পাত দিয়ে। জলের নিচে ১২২ মিটার পর্যন্ত গভীরে গিয়েছে এই স্তম্ভের ভিত। পৃথিবীর আর কোনও দেশে আর কোনও সেতুর স্তম্ভ এত গভীরে নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
দোতলা এই সেতুটি। নিচের তলায় রেলপথে ছুটবে ট্রেন। সেতুর উপরে চার লেনের চওড়া রাস্তায় চলবে গাড়ি। প্রায় ১০ হাজার কোটি বাংলাদেশি মুদ্রার ব্যবহারে তৈরি করা এই পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি)-কে এক ধাক্কায় ১.২ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং পৃথিবীর অন্য সব সেতুর চেয়ে অনেক বেশি। প্রায় ১০ হাজার টন।
পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে মাওয়া ও জাজিরায় দুটি টোল প্লাজা রাখা হচ্ছে। প্রতিটি টোল প্লাজায় ৬ টি করে বুথ। এর মধ্যে একটিতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে টোল আদায় করার ব্যবস্থা থাকবে। বাকি ৫ টিতে যানবাহন থামিয়ে হাতে টাকা সংগ্রহ করা হবে।
আগামী ২৫ জুন বাংলাদেশের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে তিন বাহিনীর প্রধান সহ সকলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায় বাংলাদেশবাসী।