রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia-Ukraine) যুদ্ধ (War) থামার কোনও লক্ষণ নেই। দুই দেশের শীর্ষস্তরের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হলেও কোনও সমঝোতা হয়নি। রাশিয়ান আক্রমণে (Attack) বিধ্বস্ত ইউক্রেন। দেশের অন্যতম বন্দর শহর মারিওপোল (Mariupol) কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় মৃতদেহের স্পূপ। ইউক্রেনের ওপর ক্রমাগত বোমাবর্ষণ জারি রেখেছে রাশিয়া। আর এই পরিস্থিতিতে দিনের পর দিন চার সন্তান নিয়ে বাঙ্কারে কাটাচ্ছেন দম্পতি। এমনই অবস্থা, বেঁচে থাকার জন্য খাবার জোগাড় করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মৃত্যুরাজ্যে দেখা গিয়েছে খাবার সংকট। তাই অন্য কোনও পথ না পেয়ে হেঁটে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
নিজেদের অ্যাপার্টমেন্টের বাঙ্কার থেকে বেরনোর ছক কষেন ইয়েভগেন টিশচেঙ্কো এবং তাঁর স্ত্রী টেটিয়ানা। কী করে এই মৃত্যুপুরী থেকে জীবন্ত বেরিয়ে সন্তানদের নিয়ে কোনও দূর প্রান্তে চলে যাওয়া যায়, সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছিল তাঁদের। ১২ থেকে ৬ বছরের চার সন্তানকে বোঝান তাদের মাইলের পর মাইল হাঁটতে হবে। আর বাচ্চারা অ্যাডভেঞ্চার ভেবে রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়ে পড়ে। তবে বেরতেই হকচকিয়ে যায় বাচ্চারা। লাশের পর লাশ রাস্তায় যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখে ভয় পেয়ে যায় তারা।
সকাল হতে না হতেই গোটা সংসার কাঁধে তুলে বেরিয়ে পড়েন ছ’জন মিলে। একটা ভাঙাচোরা ট্রলিতে মালপত্রগুলো রাখা হয়। একদম ছোট মেয়েকে বসিয়েছিলেন ট্রাইসাইকেলে। গোটা রাস্তা ট্রলি ঠেলেছেন ইয়েভগেন। আর সাইকেল ঠেলেছেন তাঁর স্ত্রী। টানা পাঁচ দিন চার রাত হেঁটে ১২৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে পরিবারটি। মাঝপথে কোনও বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন রাতটুকু। সেখানে ভালো আতিথেয়তা পেয়েছেন বলে জানান। শনিবার জ়াপোরিঝিয়া শহরে পৌঁছয় ইয়েভগেন ও তাঁর পরিবার।
তবে এপথেও এসেছিল বাধা। পড়েছিলেন একাধিকবার রুশ বাহিনীর (Russian army) মুখে। তবে এক্ষেত্রে রুশ সেনারা সাহায্য করেছেন, এমনকি তাঁদের রাশিয়া চলে যাওয়ার কথাও বলেন। তবে প্রাণ থাকতে দেশ ছাড়বেন না বলে জানান টিশচেঙ্কো দম্পতি।