গোয়েন্দা উপন্যাসে ফেলুদার ৫০ বছর হয়ে গিয়েছে সেই কবে। কিন্তু ফেলুদার বয়স ২৭ থেকে বড়জোর ৩৭ হয়েছে, তার বেশি বাড়েনি মোটেই। আজ ফেলুদা নিয়ে দেড় ডজন সিনেমা হয়ে গিয়েছে। উপন্যাসও পড়া আজকের ছেলেমেয়েদের। সুতরাং ফেলুদাকে নিয়ে নতুন করে বলার খুব একটা কিছু নেই। ইতিমধ্যে ফেলুদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, আবির চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ অভিনেতা।
একবার সত্যজিৎপুত্র সন্দীপ হিন্দিতে ফেলুদা বানিয়েছিলেন। শশী কাপুর করেছিলেন ফেলুদার চরিত্র। কিন্তু এত মোটা হয়ে যাওয়া শশীকে দর্শক গ্রহণ করেনি। যাই হোক না কেন, যেহেতু কিংবদন্তী সাহিত্যিক ও পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি 'ফেলু', অতএব ধরে নিতেই হবে তাঁর পছন্দের সৌমিত্রকে। একইভাবে জটায়ু মানেই সন্তোষ দত্ত। তা যাই হোক, ফেলুদার প্রিয় খাদ্য কী ছিল?
প্রথমেই বলা যায়, ফেলুদা মানেই চারমিনার সিগারেট (সিগারেট খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক)। সিগারেট বাদ দিলে তারপর আসে চা। একেবারে দার্জিলিংয়ের মকাইবাড়ির চা ছাড়া ফেলুদার চলে না। অবশ্য বাইরে গেলে অন্য কথা। ফেলুদা সর্বভুক, কিন্তু স্বল্পাহারী। সকালে টোস্ট-বাটার ও ওমলেট হলে মন্দ হয় না, আমরা দেখেছি সোনার কেল্লা ছবিতে। দুপুরে ঝুরঝুরে ভাত, সোনা মুগের ডাল। মাছ ফেলুদার প্রিয় খাদ্য, আমরা দেখেছি জয় বাবা ফেলুনাথে, আঙুল চেটে মাছ খেতে। অবশ্য মোগলাই বা কন্টিনেন্টাল ডিশে মোটেই আপত্তি নেই ফেলু মিত্তিরের। বোম্বাইয়ের বোম্বেটে ছবিতে মুর্গ পোলাও-এর বিবরণ। তবে স্যান্ডউইচ খেতে মোটেই আপত্তি নেই, বরং তাঁর প্রিয়। সকালে চায়ের সাথে বিস্কুট খেলেও বিকেলে চায়ের সাথে নিউ মার্কেট থেকে কেনা কলিমুদ্দির মশলা ডালমুট তাঁর চাই।
অবশ্য মাঝে মধ্যে লালমোহনবাবু যদি গরপাড়ের সিঙারা নিয়ে আসেন, তবে মন্দ হয় না। মিষ্টি খেতে আপত্তি নেই ফেলুদার, তবে সব মিষ্টি নয়। মিহিদানা বা নতুন গুড়ের সন্দেশ ফেলুদার ভীষণ প্রিয়। ফেলুদা মনে করেন, যখন যেখানে থাকবেন, সেখানকার খাবার খাওয়াই উচিত। আসলে সত্যজিৎ নিজের প্রিয় খাদ্য ফেলুদাকে খাইয়েছেন।