প্রসূন গুপ্ত: বৃহস্পতিবার কিশোর কুমারের জন্মদিন। প্রতিবছর দেশের নানা প্রান্তে পালিত হয়ে থাকে তাঁর স্মরণীয় দিনের গান নিয়ে নানা অনুষ্ঠান। যদিও আজকাল তার রেশ অনেকটাই কমেছে। তবে মিডিয়া মহল কিছু কথা তাঁকে স্মরণ করে প্রকাশ করে থাকে। বাস্তব ঘটনা, কিশোরের মতো সুকণ্ঠ বিশ্বের গানের দুনিয়ায় খুব কম এসেছে।
কিশোরের গানের জগতে প্রবেশ করে জায়গা করে নেওয়াটা খুব কঠিন ছিল। দাদা অশোক কুমার যখন মুম্বই ফিল্ম জগতের মধ্যগগনে, তখন কিশোর তাঁদের খাণ্ডোয়ার বাড়ি থেকে মুম্বাইতে চলে আসেন। দাদা অশোকের সহযোগিতা কিন্তু প্রাথমিক ভাবে কিশোর পায়নি। তখন ফিল্মি দুনিয়ায় রফি, তালাত মামুদ থেকে অনেক শিল্পীই ছিলেন এবং তৎকালীন অভিনেতাদের নতুন গায়কের উপর ভরসা মোটেই ছিল না। কিন্তু কিশোর কুমার গাঙ্গুলির সেই সুযোগ আসে শচীন দেব বর্মনের হাত ধরে। এই দেব বর্মন পরিবার চিরকাল বাঙালি গায়কদের নানা ভাবে সুযোগ দিয়েছে।
হিন্দি ছবিতে রাজ কাপুরের গান গাইতেন মুকেশ, দিলীপকুমারের জন্য ছিলেন রফি কিন্তু দেব আনন্দের খুব পছন্দের গায়ক এঁরা ছিলেন না। এক সময়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, দেব আনন্দের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত শচীন কর্তা কিশোরকে দিয়ে দেব আনন্দের গান তৈরি করতেন। দেব আনন্দের প্রিয় সংগীত পরিচালক ছিলেন এসডি বর্মনই।
ধীরে ধীরে দেব আনন্দের গায়ক হয়ে গেলেন কিশোর। কিন্তু সে আর কতই বা গান। এরপর রাজেশ খান্নার আবির্ভাব ১৯৬৯-এ। শচীন কর্তা রাজেশের কণ্ঠস্বর দেখে বুঝলেন এ একেবারে কিশোরের গলার মিল পাওয়া যাচ্ছে। তৈরি হলো ঐতিহাসিক হিট ছবি 'আরাধনা'। ব্যাস এবারে ৭০ দশকে সবাইকে টপকে কিশোর হয়ে উঠলেন একমাত্র মেল সিঙ্গার। তখন ধর্মেন্দ্র থেকে জীতেন্দ্র প্রত্যেকেই কিশোরের গলায় লিপ দিতে শুরু করলেন। কিশোরের জীবনে শচীন দেব বর্মন , দেব আনন্দ এবং রাজেশ খান্নার অবদান অস্বীকার করা যায় না।