প্রসূন গুপ্ত, কলকাতা:
দুই বাংলা। একটি ভারতের অঙ্গরাজ্য, অন্যটি স্বাধীন বাংলাদেশ। ১৯৭১ থেকে সরকার গড়ে দেশ চালাচ্ছে একঝাঁক বাঙালি। দুই বাংলা বিভক্ত হলেও সংস্কৃতি ভাগ হয়েছে কি? গানবাজনা আজও সেদেশে বাংলাতেই। রবীন্দ্র সংগীত উৎসবের মূল আকর্ষণ থাকে বাংলাদেশে। নতুন শিল্পীরা উঠে আসে রবীন্দ্র/নজরুলের গান গেয়েই। ব্যান্ড আছে সেদেশেও। কিন্তু ব্যান্ডেও রবীন্দ্র সংগীত মাস্ট। ধুতি এদেশ থেকে উঠেই গিয়েছে। ওদেশের পুরুষদের পোশাকে ধুতি ছিল না মোটেই, কিন্তু লুঙ্গি কালচার আছে। মেয়েদের আজও অনুষ্ঠানে যেতে হলে ৯০ শতাংশ শাড়ি পরতে হয়, তা যে কোনও বয়সের হোক না কেন। "মেছো বাঙালি"র বদনাম ও দেশের মানুষই গ্রহণ করেছে। কতরকম ভাবে কত মাছ খাওয়া যায়, তা ওই বাঙালিরা বোঝাচ্ছে নিয়মিত। আমাদের রাজ্যে চাইনিজ ফুড যতটা জনপ্রিয়, ওদেশে কিন্তু সব খাবার দোকানে ভাত, ডাল, শাক মাস্ট। সঙ্গে নানান পদের মাছ।
কোভিডকালে টিভি সিরিয়ালের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে নানান রিয়েলিটি শো, যা আমাদের টিভি অনুষ্ঠানে পাই। কিন্তু এখানেও ফারাক বিস্তর। আমাদের সিরিয়ালগুলিতে ঘুমাতে গেলেও অভিনেত্রী সিল্ক পরে থাকেন। কারণ বলেন, দর্শককে কর্পোরেট মুড দেখতে হবে। সেই সঙ্গে চর্বিত চর্বনের মতো একই ঘটনা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এক ঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দিয়ে করানো হয়। তার সাথে সবই ইনডোর শুটিং। কিন্তু বাংলাদেশের সিরিয়ালে আউটডোর দৃশ্য থাকবেই। একঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রীকে নির্দিষ্ট এপিসোডগুলিতে দরকার হয় না। নায়ক-নায়িকা ঘুরেফিরে তাঁদের ডায়লগ বলেন, তাতেই মুগ্ধ হয় মানুষ। সুচিত্রা-উত্তমের যুগে চলে যায়। অসাধারণ চিত্রনাট্য প্রতিটি মেগা সিরিয়ালে। অভিনয়েও দুর্দান্ত ভূমিকা। ওরা আমাদের সিনেমা চিরকাল দেখেছে, নিয়েছে রসদ, যা কিনা আমাদের টলিউড ওদের থেকে নিতে পারেনি। মোটের উপর সংস্কৃতিতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। টালিগঞ্জ ভাববে কি?