২৯ মার্চ, ২০২৪

Mahanayak: ম্যাটিনি আইডল উত্তমের লিপে হেমন্ত, শ্যামল, কিশোর কুমারের কণ্ঠ, কালজয়ী বাঙালির কাছে
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-09-03 17:22:52   Share:   

প্রসূন গুপ্ত: তিনি বেঁচে থাকলে আজ ৯৬-এ পা দিতেন। কিন্তু বাঙালির ম্যাটিনি আইডল উত্তমকুমার আজ ইতিহাস। আজকের প্রজন্মের কতজন জানেন যে ৫০ থেকে ৭০-এর দশক অবধি উত্তমকুমার মানে বাঙালির অরিন্দম, সব্যসাচী, অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, কৃষ্ণেন্দু। তৎকালীন মহিলারা মহানায়কের একটু ছোঁয়া পেতে পাগল ছিলেন। তাঁরা চাইতেন, মনের মানুষটিও যেন উত্তম কুমারের মতো হয়। তাঁকে যেন অনায়াসেই বলতে পারি, ও যেন আমাকে টাচ না করে। সে সময়ে আট-আশি সব প্রজন্মের মহিলার কাছে উত্তম মানেই 'কে প্রথম কাছে এসেছে...।' এহেন উত্তমের জীবনের বহু ঘটনা রয়েছে যা অনেকটাই তাঁর প্রয়াণ বা জন্মদিবসে চর্চিত।

উত্তম কুমার নিজে খুব ভালো গান গাইতে পারতেন। কিন্তু কোনওদিনও নিজে সিনেমায় গান করেননি। তবে সুর দিয়েছেন। ফলে উত্তমের লিপে যেকোনও গান গ্রহণযোগ্য হতো, হিট করতো। উত্তমের কণ্ঠস্বরের সঙ্গে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠ একদম হুবহু মিলে যেত। পরবর্তীতে মান্না দে গাইতেন, যা আধুনিক উত্তমের সঙ্গে ম্যাচ করে যেত। শ্যামল মিত্র উত্তমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন, তিনিও উত্তমের গান গেয়েছেন। শ্যামল মিত্রের কণ্ঠ আর উত্তম কুমারের লিপে কালজয়ী 'আমি চেয়ে চেয়ে দেখি সারদিন' আজও বাঙালির নস্টালজিয়া। এ ছাড়া মানবেন্দ্র বা সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ও গান করেছেন উত্তমের লিপে।

এবার রইলো বাকি কিশোরকুমার। কিশোর প্রধানত বলিউডি শিল্পী ছিলেন। ১৯৬৯-এ 'রাজকুমারী' বলে একটি ছবিতে মুম্বই থেকে রাহুল দেব বর্মনকে সুর করতে নিয়ে আসা হয়েছিল। রাহুল বাংলার শিল্পীদের সঙ্গে খুব একটা ঘনিষ্ঠ ছিলেন না। রাহুলের প্রিয় শিল্পী ছিলেন কিশোর, ফলে রাজকুমারীর সমস্ত গান যা উত্তমের লিপে ছিল তা কিশোরকে দিয়ে গাওয়ালেন। ছবিটি হিট করেনি, তবে গানগুলি কিন্তু খুবই হিট করেছিল। তাহলেও বাংলার পত্রপত্রিকা চূড়ান্ত সমালোচনা করলো, ছবিতে কেন উত্তমের সঙ্গে মিসফিট কিশোরকে গান করানো হলো। এরপর আর কেউ চট করে কিশোরকে দিয়ে উত্তমের গান করাননি।  এরপরই আসলো চমক। ১৯৭৫-এ মুম্বইয়ের শক্তি সামন্ত দো-ভাষী 'অমানুষ' করবেন ঠিক করলেন। সেই মতো উত্তম এবং শর্মিলাকে নেওয়া হলো। সুরকার হিসাবে নেওয়া হলো উত্তমের বন্ধু শ্যামল মিত্রকে। শক্তিবাবু শ্যামলবাবুকে পরিষ্কার জানালেন হিন্দি ভার্সনে কিশোরকে দরকার। শ্যামল জানালেন সমস্ত গানই কিশোর গাইবে দুটি ভাষাতে।

কিশোরের সঙ্গে শ্যামলবাবু বসলেন এবং রাজকুমারী ছবির ফ্লপের কথা বললেন। কিশোর জানালেন চিন্তা নেই, এবার আর তা হবে না। তারপর কিশোর একেবারে উত্তমের কণ্ঠস্বর নকল করে সমস্ত গান গাইলেন। গান এবং ছবি সুপারডুপার হিট। অবশ্য এই ছবিতে উত্তমের অবদানও কম নয়। তিনিও একেবারে দেহাতি ঢঙে পুরো ছবিতে গলার কাজ করেছিলেন। এরপর বাকি উত্তম-কিশোর জুটি তো ইতিহাস।


Follow us on :