প্রসূন গুপ্ত: চলচ্চিত্রে চুম্বন দৃশ্য নতুন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু ৬০, ৭০ দশক, যখন ভারতীয় সিনেমার স্বর্ণযুগ তখন সিনেমাতে চুম্বনের দৃশ্য কল্পনাই করা যেত না। তরুণ সমাজ তখন হলিউড ছবি দেখতো এবং অবধারিত তাতে চুম্বন দৃশ্য থাকতোই। হিন্দি সিনেমার শুরুর সময়ে ছবিতে চুম্বনের দৃশ্য একবার ছিল দেবিকারানির ছবিতে। সারা ভারতজুড়ে রে রে করে উঠেছিলেন সিনেমা প্রেমীরা। এরপর প্রায় তিন দশক পরিচালকরা চুম্বন দৃশ্য চিত্রায়িত করার সাহস দেখাননি। যদিও সত্যজিৎ রায়ের 'দেবী' ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং শর্মিলা ঠাকুরের এক শয্যা দৃশ্যে চুম্বন ছিল। তবে ওটা প্রায় চিত্রায়িত করার মতোই।

কিন্তু বলিউডি ছবিতে রাজেন্দ্রকুমার থেকে অমিতাভ বচ্চনের ছবিতে অন্তরঙ্গ দৃশ্য থাকলেও সেটা দর্শক মনে ঝড় তুলতো না। কারণ দর্শক বুঝে যেতেন অন্তরঙ্গ দৃশ্য মানেই চুম্বন বা শয্যাদৃশ্য নয়, ঠিক সময়েই ক্যামেরা ঘুরে যাবে। রাজেন্দ্রকুমার থেকে অমিতাভ বচ্চনরা সরাসরি চুম্বন দৃশ্য করতে একেবারেই অনাগ্রহী ছিলেন। তেমনই মীনাকুমারী, ওয়াহিদা রহমান থেকে শর্মিলা ঠাকুর কিংবা জয়া ভাদুড়ীরা পছন্দ করতেন না এহেন দৃশ্যে অভিনয় করতে।

তবে বলিউড ছবি যত কালারফুল হয়েছে, বিশেষ করে ৮০-র দশকে আমির খান, সলমন খান বা শাহরুখদের আমলে চুম্বন দৃশ্য এসেছিল হিন্দি সিনেমাতে। ৯০ দশকে বাংলা ছবিতেও চুম্বন দৃশ্য এসেছিল সত্যজিত রায়ের ছবি 'ঘরে বাইরে'-তে। চিত্রনাট্যে প্রয়োজন থাকেল এখনও অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী আজও চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করতে চান না | 

এবিষয়ে চলচ্চিত্র জগতে একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে, চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে অর্থাৎ বিষয়বস্তু চাইলে যৌনতা শ্লীল আর চিত্রনাট্য না চাইলে যৌনতা অশ্লীল। যেমন সলমন খান পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে নায়িকাকে অন ক্যামেরা চুম্বনে নারাজ তিনি। শত চেষ্টাতেও সলমনকে এধরনের দৃশ্য শুট করানো যায়নি। জ্যাকি শ্রফ থেকে অনিল কাপুররা চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করেছেন ঠিকই। কিন্তু রাজি করানো যায়নি জয়া প্রদা কিংবা প্রয়াত শ্রীদেবীকে।

তবে চুম্বনে নাকি সবচেয়ে স্বছন্দ আমির খান। তাঁর অধিকাংশ ছবিতেই চুম্বন দৃশ্য থাকে। জুহি চাওলা, মাধুরী দীক্ষিত থেকে করিশমা, কারিনা কাপুর কেউই বাদ যাননি আমিরের চুম্বন দৃশ্য থেকে। ভারতীয় সিনেমার দীর্ঘক্ষণের চুম্বন দেখা গিয়েছে 'রাজা হিন্দুস্থানী' ছবিতে। এতো দীর্ঘ চুম্বন বোধ করি বিদেশি ছবিতেও দেখা যায় না।