রবিবার ছুটির দিনে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত এবং মৃত্যু, দুটি সংখ্যাতেই নিম্নমুখী প্রবণতা ছিল। ফলে অনেকটাই আশার আলো দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সোমবার চিত্রটা বদলে গেল। আক্রান্তের সংখ্যা কমে ৬১৫ হলেও ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে হল ১৪ জন। রবিবার এই সংখ্যাটা ছিল ৭। লক্ষ্যণীয় হল, করোনার দৈনিক সংক্রমণ কম দেখালেও তা কিন্তু রাজ্যের প্রকৃত চিত্র নয়। বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, করোনার পরীক্ষা রোজ কত হচ্ছে, তার সঙ্গে সংক্রমণের একটা সরাসরি সম্পর্ক আছে। পরীক্ষা হা হলে সনাক্তকরণ হবে কীভাবে?? আর সেটা রোজ যদি নির্দিষ্ট সংখ্যায় না হয়, তাহলে করোনার প্রকৃত সংক্রমণ নিয়ে কোনও সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছনোও কঠিন।
রবিবার শেষ ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা হয়েছিল ৪০ হাজার ৭। অথচ সোমবার সেই সংখ্যাটাই কমে হয়েছে ২৬ হাজার ৩০৬ জন। পজিটিভিটির হার ২.৩৪ শতাংশ। উল্লেখ্য, রাজ্যে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ২ কোটি ৩৫ হাজার ৫৮৩। সেই অনুযায়ী মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ লক্ষ ১০ হাজার ৪৬০। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৯ হাজার ৩৯৭ জনের।
গোটা রাজ্যের মধ্যে কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনায় করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যু আগাগোড়া বেশির দিকেই থাকছে। রবিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, কলকাতায় একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ২১৩ জন, মৃত্যু হয়েছিল ১ জনের। উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ১৪৭ এবং ৬৩ জন। কিন্তু চিন্তার বিষয়, দুটি জেলাতেই ২ জন করে মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছিল। অর্থাৎ রাজ্যে মোট যে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল, তার মধ্যে এই তিনটি জায়গা মিলিয়েই সংখ্যাটা ৫। বাকি ১ জন করে মোট ২ জনের মৃত্যু হয়েছিল দার্জিলিং এবং নদিয়ায়।
সোমবার কিন্তু সংখ্যাটা যথেষ্ট চিন্তার জায়গায় পৌঁছে গেল। এদিন কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ১৭৩, ১৩৮ এবং ৫১। এই তিনটি জেলার মধ্যে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায় মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ৫ এবং ৪ জন। বাকি হাওড়া ও হুগলিতে ১ জন করে এবং নদিয়ায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এই পরিসংখ্যান থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার, কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা করোনা সংক্রমণে এখনও স্বস্তি দিচ্ছে না। সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় হল, রাজ্যের নানা জায়গা থেকে মানুষ নানা কাজে কলকাতায় আসেন। তাই এখান থেকে সংক্রমণ অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে কতক্ষণ।
সোমবার গত ২৪ ঘণ্টায় সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৯৪৫, যা রবিবারের তুলনায় ৭৫ কম। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এটাই আগে ৭ হাজারের ঘরে নেমে এসেছিল। ফলে সামগ্রিকভাবে স্বস্তি পাওয়ার মতো কিছুই মিলছে না।
ফলে উদ্বেগ এবং সচেতনতাই এখনও আমাদের সঙ্গী হয়েই থাকছে।