রাজ্যে করোনার প্রকোপ উল্লেখযোগ্য কিছু কমছে না। আক্রান্ত বা মৃত্যু, দুটি ক্ষেত্রেই রোজ ওঠানামা থাকলেও সামগ্রিকভাবে তা উদ্বেগেই রাখছে প্রশাসনকে। সাধারণ মানুষও যে চিন্তিত নয়, এমনটা বলে যাবে না। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরায় সচেতনতার অভাবও যেন ভালোরকমই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখনও পথেঘাটে মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা প্রায়শই চোখে পড়ে। বিশেষত, বড় বড় বাজারে এই উদ্বেগের ছবিটা রোজই ধরা পড়ছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৭৭ এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৯। শনিবার সেই বুলেটিনই বলছে, আক্রান্তের সংখ্যা ৭২৫ এবং মৃতের সংখ্যা ১২। অর্থাৎ আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও বেড়ে গিয়েছে মৃতের সংখ্যা।
তবে পরিসংখ্যান থেকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বেরিয়ে আসছে। তা হল রাজ্যের মধ্যে পরিস্থিতি এখনও খারাপ কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনার। শনিবারের হিসাব অনুযায়ী, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ২০১, ১২৫ এবং ৬১ জন। কিন্তু ওই তিনটি জেলাতেই মৃত্যু হয়েছে তিনজন করে। বাকি গোটা রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের, নদিয়া, বীরভূম এবং পশ্চিম বর্ধমানে একজন করে। বোঝাই যায়, এই তিনটি জেলা এখনও নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গোটা রাজ্যে এখনও ২০৩টি হাসপাতাল কোভিড রোগীদের জন্যই নির্ধারিত। এর মধ্যে ১৯৬টি সরকারি হাসপাতাল, বাকি ৭ টি বেসরকারি। এখনও পর্যন্ত হোম আইসোলেশনে আছেন ৬৮৭০ জন, হাসপাতালে আছেন ৯৭৯ জন এবং সেফ হোমে আছেন ১৯৬ জন।
কোভিড আক্রান্ত ঠিক কত, তা জানতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে পরীক্ষার সংখ্যা। শনিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩৬ হাজার ১১৭টি। ঠিক আগের ২৪ ঘণ্টায় এই নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ৩২২ টি। অর্থাৎ শুক্রবারের তুলনায় শনিবার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে প্রায় ৮ হাজার কম। নমুনা পরীক্ষা কম হওয়া মানেই কেভিড আক্রান্তের সংখ্যাও কম ধরা পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। কারণ আগের আরও দুদিনের নমুনা পরীক্ষার তথ্য পর্যবেক্ষণ করলেও দেখা যাবে, দুদিনই পরীক্ষা হয়েছিল ৪৪ হাজারের আশপাশে এবং আক্রান্তের সংখ্যাও ধরা পড়েছিল সাড়ে আটশোর আশপাশে। সুতরাং আক্রান্তের সংখ্যা কম বলেই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে, এই সিদ্ধান্তে আসা যুক্তিগ্রাহ্য নয়।