হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে রাজ্য তথা জেলা প্রশাসনের। ফলে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাজারগুলি ইতিমধ্যেই বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন ও স্থানীয় পৌরসভা। তারই ছবি ধরা পড়ল বিভিন্ন জেলার একাধিক বাজারে। বারাসতে সমস্ত বাজার সপ্তাহে তিনদিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌরসভা। মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি-এই তিনদিন বন্ধ থাকবে বাজার। আপাতত আগামী দু-সপ্তাহ পরীক্ষামূলকভাবে দেখা হবে। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত। এই মর্মে সমস্ত বাজারে মাইকিং করে প্রচার চালাচ্ছে বারাসত পৌরসভা। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকবে বলে জানানো হচ্ছে।
তবে বাজার বন্ধের এই সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সাধারণ মানুষের। ক্রেতা-বিক্রেতাদের দাবি, একদিন বাদে একদিন বাজার খোলা থাকলে বাজারে ক্রেতার ভিড় বাড়বে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা কতটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ জানিয়েছে, সিদ্ধান্ত ঠিকই আছে। তবে সাধারণ মানুষ যদি সচেতন না হয়, তাহলে সংক্রমণ ঠেকানোও সম্ভব হবে না।
পানিহাটি পৌর এলাকাতেও করোনার সংক্রমণ লাগামছাড়া। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫০ জন করে সক্রমিত হচ্ছেন। তাই এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে পানিহাটি পৌরসভার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল, অঞ্চলের সমস্ত বাজার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান একদিন অন্তর খোলা থাকবে। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি বাজার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। যে দোকানগুলি খোলা হয়েছিল, সেগুলিও অভিযানে নেমে বন্ধ করে দেয় পুলিস-প্রশাসন। ফলে কিছুটা হলেও সমস্যার সম্মুখীন ব্যবসায়ীরা।
সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ঘোলা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সহ বিশাল পুলিসবাহিনী আগরপাড়ার কুসুমপুর বাজার অঞ্চলের পথচলতি মাস্কবিহীন কিছু মানুষকে সচেতন করলেন। ব্যবসায়ীরা নিজেদের সাময়িক ক্ষতি স্বীকার করেও বৃহত্তর স্বার্থে নির্দেশ মেনে নিতে রাজি হয়েছেন। আর তৎপর পুলিস-প্রশাসন জানিয়েছে, পৌরসভার এই সিদ্ধান্ত যথাযথ কার্যকর করতে তারা বদ্ধপরিকর।
অন্যদিকে শিলিগুড়ির পর এবার সপ্তাহে একদিন নকশালবাড়ির পুরো বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল ব্যবসায়ী সমিতি। সোমবার নকশালবাড়ি ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েত ও ব্যবসায়ী সমিতির যৌথ উদ্যোগে বাজার স্যানিটাইজ করা হয়। মঙ্গলবার থেকে জনগণকে মাস্ক ও করোনাবিধি নিয়ে সচেতনতার প্রচার শুরু হবে। গত ৫ দিনে একশো ছুঁই ছুঁই নকশালবাড়ির গ্রাফ। এই মূহুর্তে সচেতনতাই প্রধান পথ। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিখিল ঘোষ জানান, এই সপ্তাহে বৃহস্পতিবার থেকে বাজার পুরোপুরি বন্ধ করা হবে। চলবে পুরো বাজারে স্যানিটাইজেশন।
বারুইপুর ব্লকের ১৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়ও দেখা গেল একই চিত্র। বাজার ও দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেখানকার জেলা প্রশাসন।
তবে বিপরীত চিত্র ধরা পড়েছে দুর্গাপুরের একাধিক বাজারে। মাস্ক ছাড়াই অনেকে বাজারে আসছেন। নেই সামাজিক দূরত্ব। কোনওরকম তোয়াক্কাই করা হচ্ছে না সরকারি বিধিনিষেধকে। ভিড় জমিয়ে দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন সেন মার্কেটে চলছে বেচাকেনা, হুঁশ নেই কারও।