দেশজুড়ে বুস্টার অথবা প্রিকশন ডোজ দেওয়া শুরু হল। প্রথমে এই টিকা দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রথম সারির করোনা-যোদ্ধাদের। ষাটোর্ধ্বদেরও দেওয়া হচ্ছে বুস্টার ডোজ। মূলত সেকেন্ড ডোজ নেওয়ার ২৭৫ দিনের মাথায় বুস্টার ডোজ নেওয়া যাবে, এমনটাই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। কলকাতা পুরসভা এলাকার চেতলায় মেয়র ক্লিনিকেও আজ থেকেই আরম্ভ হয়ে গেল ভ্যাক্সিনেশনের বুস্টার ডোজ।
কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনেই তৃতীয় ডোজ বা সতর্কতামূলক ডোজ শুরু হল। মেয়রের বাড়ির সামনে এই ক্লিনিক থেকেই প্রথম করোনা টিকা দেওয়া শুরু হয়েছিল। ঠিক একইভাবে তৃতীয় ডোজ শুরু হল আজ থেকে। যাঁরা কোভাক্সিন নিয়েছিলেন, তাদের কোভাক্সিন ডোজ দেওয়া হল। আর যাঁরা কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন, তাঁরা সেই টিকাই নিয়েছেন। আজকে বেশ ভালো সংখ্যক মানুষ এই মেয়র ক্লিনিক থেকেই তৃতীয় ডোজ বা সতর্কতামূলক ডোজ নিলেন।
অন্যদিকে, কলকাতা পুলিস এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও ব্যাপকহারে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। কোনও হাসপাতালই তালিকা থেকে বাদ নেই। এক নজরে সেই পরিসংখ্যানের দিকে তাকানো যাক। তাহলেই ভয়াবহ চিত্রটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
কলকাতা পুলিসে এদিন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫০ জন। তার মধ্যে ছাড়া পেয়েছেন ৩৮ জন। অর্থাৎ সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৪১২ জন। সোমবার সকালের হিসাব অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড ৯৬ জন।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আক্রান্ত ৪০ জন স্বাস্থ্যকর্মী। এঁদের মধ্যে পাঁচ থেকে ছজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বাকিরা স্নাতকোত্তর চিকিৎসক, নার্সিং স্টাফ এবং হাসপাতালের বিভিন্ন শ্রেণির কর্মী। প্রত্যেকে বাড়িতে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। প্রত্যেকেরই মৃদু উপসর্গ রয়েছে।
ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে আক্রান্ত ২৫০ জন স্বাস্থ্যকর্মী। এঁদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় ৩০। বাকি ১২০ জন স্নাতকোত্তরের চিকিৎসক। বাকিরা ইন্টার্ন ডক্টর ও নার্সিং স্টাফ।
আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে আক্রান্ত ৮০ জন চিকিৎসক। এঁদের মধ্যে স্নাতকোত্তরের চিকিৎসক ৪০ জন। বাকিরা ইন্টার্ন ডক্টর, হাসপাতালের বিভিন্ন শ্রেণির কর্মী।
এসএসকেএমে নতুন করে আক্রান্ত ৩৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী। এঁদের মধ্যে ৫ থেকে ৬ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। বাকিরা স্নাতকোত্তর চিকিৎসক, ইন্টার্ন ডক্টর।
সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, পিজিটি নার্সিং স্টাফ ও ইন্টার্ন ডক্টর মিলিয়ে ৩০ জন আক্রান্ত করোনায়। প্রত্যেকেরই মৃদু উপসর্গ রয়েছে। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন আক্রান্তরা।
এসবই রাজ্যের নিরিখে খণ্ডচিত্র মাত্রষ বাকি সব জায়গার হিসাব ধরলে পরিস্থিতি যে কী ভয়াবহ হতে পারে, তা সহজেই আঁট করা যায়।