
দুর্যোগ কেটে গেলেও এখনও একাধিক জায়গায় তার দগদগে ক্ষতচিহ্ন। প্রথমত, করোনা পরিস্থিতির জেরে রাজ্যজুড়ে ছিল কড়া বিধিনিষেধের বেড়াজাল। লকডাউন শিথিল করা হলেও এতদিন পর্যন্ত বন্ধ ছিল লোকাল ট্রেন। এছাড়াও আমফান, বুলবুলের জেরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল ফুলচাষিদের। আবার বেশ কিছুদিন ধরে টানা বৃষ্টির ফলে পুজোর মরশুমে মাথায় হাত পড়েছিল ফুল চাষিদের।
এদিকে ভোরের দিকে দুটি স্পেশাল ট্রেন চালু করা হলেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা ঠিকমতো আসতে পারছেন না। তার ওপর লাগামছাড়া বেড়েই চলেছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম। বেড়েছে বাস ভাড়া। বেড়েছে অন্যান্য ভাড়াগাড়ির খরচও। ফলে অন্য পথে আসতে গেলে টান পড়ছে লাভের অঙ্কে। তাই অনেক ব্যাবসায়ী মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন এই ব্যবসা থেকে।
অন্যদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টির পর উঠতে শুরু করেছিল রোদ। আর তাতেই ফুলের চারা যাচ্ছে নষ্ট হয়ে যায়। এককথায়, গোদের উপর বিষফোঁড়া।
এমন পরিস্থিতিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পূর্বস্থলীর পলাশপুলি, পারুলিয়া এলাকার নার্সারি মালিকরা। শীতের মরশুমে প্রচুর পরিমাণে ফুলের চারা চাষ হয় এই এলাকায়। বহু দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে ফুলের চারা নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন তাঁদের নিজেদের এলাকায়।
এক ফুলচাষি জানান, সামনেই বিয়ের মরশুম। ফুল ব্যবসায়ীরা গোটা বছর তাকিয়ে থাকেন এই সময়টার জন্য। অনেক ব্যবসায়ী আছেন, যাঁরা বিয়েবাড়ির লোকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা অগ্রিম হিসেবে নিয়েছেন। আর সেই টাকা মহাজনদের দেওয়া হয়েছে ফুল কেনার জন্য।
প্রায় ৬ মাস পর রবিবার থেকে রাজ্যে চালু হয়েছে লোকাল ট্রেন। আপাতত ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য। তবে সোমবার কাজের প্রথমদিনই দেখা গেল উপচে পড়া ভিড়। তবুও সরকারের এই সিদ্ধান্তে কিছুটা আশার আলো দেখছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। এখন দেখার এটাই, লোকাল ট্রেন চালু কতটা ফলপ্রসূ হতে পারে এই ফুল ব্যবসায়ীদের কাছে।