
ইংরেজি'তে(English) স্নাতক(Graduation), স্বপ্ন ডব্লিউবিসিএস(WBCS) পাশ করে বড় অফিসার হওয়া। কিন্তু লটারি বিক্রেতার কন্যার সেই স্বপ্নপূরণে বাধ সেধেছিল আর্থিক সংকট । তা দেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) পুলিস(Police)। পুলিসের এই মানবিক মুখ স্বপ্ন পূরণের পথে একধাপ এগিয়ে দিল জলপাইগুড়ির নবামবিকাকে।
জলপাইগুড়ি শহরের আদরপাড়ার বাসিন্দা নবামবিকা দাশগুপ্ত। বাবা নাড়ুগোপাল দাশগুপ্ত লটারি বিক্রেতা(Lottery seller)। দীর্ঘদিন আগে পথদুর্ঘটনায় নাড়ুগোপাল বাবু ডান-হাত খুইয়েছিলেন। তারপর থেকেই শহরের স্টেশন রোডে একফালি দোকানে বসে লটারি বিক্রি করেই সংসার চলে তাঁর। দুই মেয়ে। ছোট মেয়ে নবামবিকা ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্রী(Meritorious student)। জলপাইগুড়ি প্রসন্নদেব মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে ইংরেজি'তে স্নাতক হয় ২০২১ সালে। স্বপ্ন ছিল ডাব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় পাশ করে মস্ত অফিসার হবে সে। কিন্তু সাধ থাকলেও সাধ্য ছিল না। কারন এতবড় পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ নিতে গেলে অনেক টাকার দরকার। কিন্তু সেই সার্মথ্য ছিল না বাবা নাড়ুগোপাল বাবুর।
লটারির দোকান থেকেই তাঁর সংসার চলত। সেই দোকানে বাবা'কে কাজে সাহায্য করত নবামবিকাও। কিন্তু করোনার প্রকোপে সেই রোজগার প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেই কোপই এসে পড়ে নবামবিকার পড়াশোনার ওপর। স্বপ্ন প্রায় ভেঙে যেতে বসেছিল তাঁর।
ঠিক সেই সময়ই পাশে এসে দাঁড়াল জলপাইগুড়ি পুলিস(Jalpaiguri police) । যে পুলিস চোর,ডাকাত ধরতে বা অপরাধ দমনেই শুধু ব্যস্ত থাকত বলে ধারণা ছিল নবামবিকার। সেই পুলিসই মানবিক হাত বাড়িয়ে দিল, তাঁর স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যে। তাঁকে ডাব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় বসার উপযুক্ত প্রশিক্ষণের জন্য শিলিগুড়ির একটি নামি বেসরকারি কোচিং সেন্টারে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে পুলিসের পক্ষ থেকে। সেই সেন্টারের দুই বছরের কোচিং এর ফি বাবদ প্রায় ৭৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে পুলিসের পক্ষ থেকে।
জলপাইগুড়ির পুলিস সুপার(Police Super) দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, এর জন্য কোতোয়ালি থানার প্রত্যেক পুলিস আধিকারিক এবং কর্মী নিজের সাধ্যমত অর্থ দিয়েছেন। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি সহ সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে ডাক পেয়ে কোতোয়ালি থানায়( Kotwali police station ) এসেছিলেন নবামবিকা এবং তাঁর বাবা নাড়ুগোপাল দাশগুপ্ত। সাহায্যের পাশাপাশি নবামবিকার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে সফল ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা জানান পুলিস সুপার। তাতেই আপ্লুত নবামবিকার বাবা।
আর মানবিক পুলিসের বাড়িয়ে দেওয়া হাত ধরতে পেরে একধাপ এগিয়ে যাওয়া নবমবিকা ফের সাফল্যের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।